নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে অব্যাহতি পেলেন আইনজীবী তাজুল

ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল ডাকা এবং রায় নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ায় আইনজীবী তাজুল ইসলামকে অব্যাহতি, জামায়াতের তিন নেতাকে সতর্ক এবং শিবিরের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা প্রশ্নে রুল জারি করে আদেশ দেয়া হয়েছে। সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেয়।
জামায়াত-শিবিরের ৫ নেতা ও আইনজীবী তাজুলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা প্রশ্নে গত ১২ জানুয়ারি রুল জারি করা হয়েছিল। রুলের শুনানি শেষে গত ২০ এপ্রিল ৪ মে সোমবার আদেশ দেয়ার জন্য দিন ধার্য করে দেয়া হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধে গত বছর ৩০ ডিসেম্বর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড রায় দেয়ার পর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বিরূপ মন্তব্য করেন। আইনজীবী তাজুল ইসলাম রায়ের পর তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন যে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়েছেন, সেটা গ্রহণ না করে ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলা হলেই সুবিচার হতো। এসব সাক্ষ্য-প্রমাণে মৃত্যুদণ্ড হওয়া দূরের কথা, এসব অভিযোগ দাখিলের জন্য প্রসিকিউশনের জরিমানা হওয়ার দরকার ছিল।
আজহারের বিরুদ্ধে রায়কে ‘অষ্টম আশ্চর্য’ বলেও মন্তব্য করেন আইনজীবী তাজুল। এছাড়াও ওই রায়ের পর গত ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি হরতাল আহ্বান করে জামায়াত। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিবৃতি দিয়ে ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে বিভিন্ন বিরূপ মন্তব্য করেন জামায়াত-শিবিরের নেতারা। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করা হয়।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে গত ১ জানুয়ারি ওই ছয়জনের বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগটি দাখিল করা হয়েছিল। ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাজুল ইসলাম, জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ড. শফিকুর রহমান, ছাত্রশিবির সভাপতি আব্দুল জব্বার ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে রুল জারি করে ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালে তাজুল ইসলামের পক্ষে ব্যারিস্টার বদরুদোজ্জা বাদল নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে লিখিত জবাব দাখিল করেন। রুল বিষয়ে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমেদ, নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের দেয়া ব্যাখ্যা ‘গ্রহণযোগ্য’ মনে হওয়ায় তাদের সতর্ক করে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এছাড়া একই ঘটনায় জামায়াতের সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের দুই শীর্ষ নেতা আব্দুল জব্বার ও আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না -এবিষয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে (২৪ মের মধ্যে) তার জবাব দিতে আদেশে উল্লেখ করেছে ট্রাইব্যুনাল।
আরএস/আরআইপি