কারাবন্দি নেই তবে আছে অসংখ্য স্মৃতিচিহ্ন
‘জেলখানার সম্বল থালা বাটি কম্বল, আমি বন্দী কারাগারে, আছি মা গো বিপদে’ এ সব গানের পংক্তি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে মোটা লোহার গ্রিলে ঘেরা কারাগারে বন্দী হাজতির মুখ। জেলে অবস্থানকালীন সময়ে খাবার জন্য থালা-বাটি ও ঘুমানোর জন্য কম্বলই হয় একান্ত সঙ্গী।
রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে ১৭৮৮ সালে নির্মিত ২২৭ বছরের পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারটি গত বছর (২০১৬ সালের ২৯ জুলাই) কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরিত করা হয়। স্থানান্তরের পর এক দিন দু’দিন করে পেরিয়ে গেছে ১৫টি মাস।

দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার জুড়ে বন্দী কয়েদিদের অসংখ্য স্মৃতিচিহ্ন রয়ে গেছে। বুধবার সরজমিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও মনিহারসহ বিভিন্ন ভবন ঘুরে দেখা গেছে দেয়ালে বন্দীদের লেখা নানা উপদেশমূলক উক্তি ও সুখ দুঃখের কথা।

মেঘনা ভবনের নীচতলার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে প্রবেশ করতেই দেখা যায় বিভিন্ন রংয়ের বেশ কিছু কম্বল পড়ে আছে। প্রায় প্রতিটি ভবনেই নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদও রয়েছে। বন্দীরা নিজেরা মসজিদের প্রতিকৃতি এঁকেছেন। সেলফে কোরআন শরীফ ও বিভিন্ন ইসলামি বইপত্র পড়ে আছে।

কারা অধিদফতরের একজন কারারক্ষী দেখালেন, কারাগারে নিয়ে আসার পর বন্দীদের প্রথমে রাখার স্থান, তাদের গোসল, চুল কাটা এবং রান্না করার স্থান। বন্দিদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ বন্দীদের যে হাসপাতালে রাখা হতো তাও দেখালেন।

কারা হাসপাতালে প্রবেশপথেই সিভিল সার্জনের কক্ষ। ডানে বামে মেডিসন, সার্জারি, অর্থপেডিকস-সহ বিভিন্ন কক্ষ। কারাগার স্থানান্তরিত হওয়ায় এখন ওয়ার্ডগুলো শূন্য। তবে কয়েকটি পরিত্যক্ত হাসপাতালের বিছানা দেখে বোঝা যায় এখানে রোগীরা থাকতেন।

বুধবার দুপুর ১টায় কারা অভ্যন্তরে দেখা হয় কারা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে।

আলাপকালে তিনি আমদানি সেল দেখিয়ে বলেন, এই যে বৈঠকখানা দেখছেন এখানে আয়নাবাজি চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছিল। এমন নানা স্মৃতিচিহ্ন রয়ে গেছে লাল দালান খ্যাত নাজিমউদ্দিন রোডের এই পরিত্যক্ত কারাগারে।
এমইউ/এআরএস/পিআর