১৬২ ছিটমহলে যৌথ জরিপ শুরু
বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ জরিপ দল দু’রাষ্ট্রের মধ্যকার ১৬২টি ছিটমহল সফর ও ছিটমহলবাসীদের মতামত সংগ্রহে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছেন। সোমবার বেলা পৌণে ১১ টায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার সবচেয়ে বড় ছিটমহল দাশিয়ার ছড়ার কালিরহাট বাজারে হেড কাউন্টিং-র উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক খান মোহাম্মদ নুরল আমিন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তবারক উল্লাহ, ফুলবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন মাহমুদ, ওসি বজলুর রশীদ, ছিটমহল আন্দোলন কমিটির সভাপতি মঈনুল হক, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি ও ভুরুঙ্গামারী এই দুটি উপজেলায় ভারতীয় ১২টি ছিটমহল জরিপের জন্য ভারত থেকে ১৫ সদস্যের একটি জরিপ দল এসেছে। এর মধ্যে ১১জন গণনাকারী এবং ৪ জন সুপারভাইজার রয়েছে। একইভাবে বাংলাদেশ থেকে একটি টিম ভারতের ৫১টি ছিটমহলে হেড কাউন্টিং করার জন্য চলে গেছে।
রোববার ছিটমহল জরিপ কাজের জন্য নিয়োজিত ভারতীয় গণনাকারী এবং সুপারভাইজারদের নিয়ে সদর উপজেলা হলরুমে তিন ঘণ্টাব্যাপি এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ছিটমহলবাসীর জমি সংক্রান্ত জরিপ, নিরাপত্তা বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয়ক কাজের জন্য একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। ১৬২টি ছিটমহলে উভয় দেশের ৭৫ জন করে গণনাকারী এবং সুপার ভাইজার কাজ করছেন।
বাংলাদেশ এবং ভারতের বিভিন্ন ছিটমহলে যে হেড কাউন্টিং হবে তা ২০১১ সালের জরিপ অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। শুধুমাত্র যারা ২০১১ সালের পর ছিটমহলে জন্ম গ্রহণ এবং বিয়ে করেছে ওইসব বধূর নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।
২০১১ সালের জন গণনা অনুযায়ী এসব ছিটমহলে বর্তমান বসবাস করছে প্রায় ৫১ হাজার মানুষ। ২৪ হাজার ২৬৮ একর ভূমি নিয়ে দু’দেশের ছিটমহল। এর মধ্যে ভারতের ১৭ হাজার ১৫৮ দশমিক ৫ একর এবং বাংলাদেশের ৭ হাজার ১১০ দশমিক ৩ একর।
ভারতীয় এই ছিটমহলগুলোতে ভারতের গণনাকারী এবং সুপারভাইজাররা ছিটমহলবাসীদের কাছে জানতে চাইবেন তারা ভারতীয় নাগরিক হয়েও কেন বাংলাদেশি নাগরিক হতে চায়। তাদের সুযোগ থাকবে হেডকাউন্টিং শেষেও তারা দেশের নাগরিকত্ব পরিবর্তনের সুযোগ পাবে।
আগামী ৩১ জুলাই মধ্যরাত হতে দু`দেশের ভিতরে থাকা ছিটমহল হস্তান্তর করা হবে। ছিটমহল হস্তান্তর প্রক্রিয়া জটিলতা এড়াতেই সোমবার থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত প্রতিটি ছিটমহলের খানা জরিপ করা হবে। এই জরিপ হতে ছিটমহলের প্রকৃত জনসংখ্যা, ঘরবাড়ি, অর্থসম্পদ এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থা জানা যাবে। এছাড়াও প্রসাশনের পক্ষ থেকে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় ২২ জুন হতে ৩১ জুলাই’১৫-র মধ্যে ছিটমহলে জমি বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ সময়ের পর ১ আগষ্ট থেকে ৩০ নভেম্বর’১৫ পর্যন্ত স্ব-স্ব স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতিক্রমে জমি বিক্রি করা যাবে।
নাজমুল হোসেন/এসএস/এমএস