করোনার রিপোর্ট না দেখানোয় ভর্তি নেয়নি চমেক, আইনজীবীর মৃত্যু
করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট না থাকায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি নেয়নি সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম চৌধুরীকে (৬০)। তিনি সকালে চমেক হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে বাসায় ফেরেন। আর বিকেলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার (২৮ মে) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এই আইনজীবী চট্টগ্রামে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। বিষয়টি জাগো নিউজকে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। মৃত্যুকালে তিনি দুই পুত্র ও এক কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন।
আমিন উদ্দিন মানিক জানান, রাতে জানাজা শেষে কোয়ান্টাম সদস্যদের সহযোগিতায় সাতকানিয়ার গ্রামের বাড়ি কাঞ্চনাতে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির ( বার) সাধারণ সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু হোসেন মো. জিয়া উদ্দিন পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে জাগো নিউজকে জানান, তিনি প্রায় মাস খানেক যাবৎ শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। বুকে ব্যথা নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে যাওয়ার পর তাকে করোনা টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট নিয়ে আসতে বলা হয়।
পরে পরিবারের সদস্যরা তার নমুনা পরীক্ষা করানোর চেষ্টা করন। কিন্তু কিট না পাওয়ায় তার করোনা পরীক্ষা করাতে পারেননি। আর করোনার রিপোর্ট না থাকায় তাকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়নি। এ অবস্থায় তিনি মেডিকেল থেকে আবার বাসায় চলে যান এবং বিকেলে তিনি মারা যান।
বারের এই সম্পাদক আরও বলেন, বর্তমানে করোনাকালীন সময়ে যেহেতু হাসপাতালে যে কোনো রোগীর চিকিৎসা দেয়ার আগে ওই ব্যক্তির করোনা আছে কিনা টেস্ট করা হয় এবং রিপোর্ট দেখে ডাক্তাররা রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। ওনারও একই অবস্থা হয়েছে।
দেশের একজন আইনজীবীর চিকিৎসার এই দুরবস্থা দেখে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা বলেছেন, মারাত্মক কোনো রোগে আক্রান্তদের করোনা রিপোর্টের জন্য রোগীর চিকিৎসা না দেয়া বা হাসপাতালে ভর্তি না করানো কতটুকু যুক্তিসঙ্গত? এ অবস্থা চলতে থাকলে করোনায় যারা মারা যাবে তার চেয়ে অন্য রোগে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে আরও অনেক বেশি মানুষ। এ অবস্থার অবসানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিকট জোর দাবি জানানিয়েছে আইনজীবীরা।
এফএইচ/এমএফ/পিআর