স্লোগানেই সীমাবদ্ধ ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১২:৪২ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০২০

বাংলা একাডেমির মূল ফটকের সামনে বোর্ড টানিয়ে বড় বড় হরফে লেখা রয়েছে-মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নিষেধ, মাস্ক পরিধান করুন, সেবা নিন। নো মাস্ক নো সার্ভিস। গেটের সামনে দুজন কর্মচারীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তবে তাদের কারোর মুখে মাস্ক নেই। এ সময় একজনকে মাস্ক ছাড়াই দিব্যি গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে দেখা যায়।

অল্প দূরত্বের ব্যবধানে দোয়েল চত্বর সংলগ্ন শিশু একাডেমির প্রবেশদ্বারে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ সাইনবোর্ড ঝুললেও নিরাপত্তারক্ষীদের মাস্ক ছাড়াই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় সরকারি এ দুটি প্রতিষ্ঠানে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের সেকেন্ড ওয়েভ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সরকারি অফিস-আদালতসহ বিভিন্ন স্থানে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস (মুখে মাস্ক না পরলে সেবা দেয়া হবে না) নির্দেশনা রয়েছে। তারপরও কার্যত এটি এখনো স্লোগানেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে।

jagonews24

গত কয়েকদিন করোনা সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সংক্রমণরোধে ঘরের বাইরে বের হলে প্রত্যেকেই মুখে মাস্ক পরিধানসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। অন্যথায় যেকোনো সময় সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেতে পারে।

জানা গেছে, কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ইতোমধ্যেই ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ নির্দেশনার কঠোর বাস্তবায়ন, ঘরের বাইরে মাস্ক পরিধান ও ঘনঘন হাত ধৌত করার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। জনগণকে সচেতন করে তোলার পাশাপাশি প্রয়োজনে কঠোর আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে। সচিবালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানতে কঠোর নিয়মাবলী অনুসরণ করা হচ্ছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে মসজিদ ও মন্দিরসহ সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করতে ব্যাপক প্রচারণ চালাতে বলা হয়েছে।

করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকে বিভিন্ন স্পটে ঢাকা ওয়াসার উদ্যোগে নগরবাসীর হাত ধোয়ার জন্য স্থাপিত বেসিন ও পানির ড্রামগুলো ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হলেও গত বেশ কিছুদিন যাবত সেগুলো প্রায় অব্যবহৃত থাকায় ড্রাম ও বেসিনে ময়লা ও শ্যাওলা জমে গেছে। তবে সেকেন্ড ওয়েভ প্রতিরোধে নতুন করে বিভিন্ন স্পটে পানির ড্রামগুলো ধোয়ামোছা ও বেসিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের কাজ চলছে।

jagonews24

উল্লেখ্য, সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে ২৫ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ছয় হাজার ৯২ জনে। করোনায় মোট মৃতদের মধ্যে পুরুষ চার হাজার ৬৮৮ জন (৭৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ) ও নারী এক হাজার ৪০৪ জন (২৩ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ)।

করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৫টি পরীক্ষাগারে ১৪ হাজার পাঁচটি নমুনা সংগ্রহ ও ১৪ হাজার ৪২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। একই সময়ে করোনা আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ৬৮৩ জন।

ফলে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল চার লাখ ২১ হাজার ৯২১ জনে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪৪টি।

এমইউ/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।