দুদকে ৭০ জন করোনায় আক্রান্ত, মৃত্যু ৩
দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পরিচালক থেকে শুরু করে ৭০ জনেরও বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকি তথ্যপ্রযুক্তি অনুবিভাগের মহাপরিচালকও আক্রান্ত হয়েছেন এ ভাইরাসে। এখনও তিনজন পরিচালক চিকিৎসাধীন। করোনায় দুদকের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারী ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন।
এরপরও নির্দেশ অনুসারে কমিশনের তথ্যপ্রযুক্তি অনুবিভাগ দিনরাত পরিশ্রম করে কমিশনের অধিকাংশ কার্যক্রমই ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন করার নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে কমিশনের প্রশাসন অনুবিভাগ, প্রতিরোধ অনুবিভাগ, লিগ্যাল অনুবিভাগ ও তদন্ত অনুবিভাগের অধিকাংশ নথির কার্যক্রম ই-নথিতে সম্পন্ন করছে।
প্রযুক্তির এই নেটওয়ার্ক সচল রাখতে কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে কাজ চলছে। দুদক শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতায় দুদক প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় কার্যালয় ও সজেকাসমূহকে একটি একক নেটওয়ার্কের আওতায় আনার জন্য অফিসমূহে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা ল্যান স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) করোনাকালে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার তথা তথ্যপ্রযুক্তি অনুবিভাগের কার্যক্রমের এক পর্যালোচনা সভায় অনুবিভাগটির মহাপরিচালক এ কে এম সোহেলের কার্যক্রম তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের কাছে উপস্থাপন করেন। সেখানে এসব তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ সংক্রান্ত প্রকল্পের আওতায় তদন্ত ও প্রসিকিউশন ব্যবস্থাপনার জন্য সফটওয়্যার নির্মাণের কাজও প্রায় শেষ হয়েছে। এ ডাটা সেন্টার থেকে সফটওয়্যারের মাধ্যমে কমিশনের প্রতিটি অনুসন্ধান, তদন্ত ও প্রসিকিউশন স্ট্যাটাস ডিজিটালি মনিটরিং করা যাবে। কমিশনের নিজস্ব ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ইতোমধ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কমিশনকে সরবরাহ করেছে। কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হচ্ছে। ফরেনসিক ল্যাবের সফটওয়্যার ইনস্টলেশনের কাজ চলছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, করোনাকালে কমিশনের সজেকা, বিভাগীয় কার্যালয় এবং প্রধান কার্যালয়ের ১৮১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ইলেকট্রনিক নথি ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। দুদক অভিযোগকেন্দ্রের হটলাইন-১০৬ এ অভিযোগ গ্রহণ ও ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে ৩০ জন কর্মকর্তাকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত সংস্থা এফবিআই কর্তৃক প্রদত্ত ও মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে আয়োজিত ‘ডিসম্যান্টলিং ক্রিমিনাল : ইনভেস্টিগেটিং বিজনেস ই-মেইল কম্প্রোমাইজ স্কিম’ শীর্ষক ওয়েবিনার প্রশিক্ষণে দুদকের একজন মহাপিরচালকসহ ২৫ জন কর্মকর্তা ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাসের আর্থিক সহায়তায় অপর একটি প্রশিক্ষণে ৬০ জন কর্মকর্তা ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। এভাবে করোনাকালে দুদকের তিন শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে কমিশন। নিয়মিত কমিশন সভা ছাড়াও শতাধিক ভার্চুয়াল সভার মাধ্যমে কমিশনের সব ধরনের প্রশাসনিক যোগাযোগ ও নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
করোনাকালে (মার্চ থেকে অক্টোবর) কমিশনের যাচাই-বাছাই কমিটির নিয়মিত বৈঠকের মাধ্যমে মোট ৭ হাজার ২৭০টি অভিযোগ যাচাই–বাছাই করে কমিশনের অনুমোদনক্রমে চার শতাধিক অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। একই সময়ে কমিশনের এনফোর্সমেন্ট শাখা থেকে শতাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এমইউ/এফআর/জেআইএম