রাস্তায় দূরপাল্লার বাস, সায়েদাবাদে ঘরমুখো মানুষের ভিড়
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল করছে। মানা হচ্ছে না যাত্রী পরিবহনের স্বাস্থ্যবিধি। টার্মিনালটিতে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় লেগেছে। কিন্তু এসব যানবাহন চলাচল বন্ধে পুলিশের তেমন তদারকি চোখে পড়েনি।
তবে যাত্রীদের অভিযোগ, আগামী বুধবার থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে ঢাকায় থাকলে তাদের না খেয়ে মরতে হবে। ইতোমধ্যে অনেকেরই কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। এখন উপায় না পেয়ে বাড়ির পথ ধরেছেন তারা। কিন্তু টার্মিনাল থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যের পর্যাপ্ত বাস না পাওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেল তিনটায় সরেজমিন দেখা যায়, সায়েদাবাদ টার্মিনালে রেলগেট থেকে জনপথের মোড় পর্যন্ত ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। এর মধ্যে ‘নাদিয়া কান্তা রিদি’ পরিবহনে উঠছেন কুমিল্লার যাত্রীরা। বাসের ভেতর গাদাগাদি করে বসছেন তারা। এই প্রতিবেদক ছবি তুলতে গেলে চালক দ্রুত বাসটি সড়ক থেকে ঘুরিয়ে টার্মিনালের ভেতরে নিয়ে যান। যাত্রী পরিবহনে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ সময় আরও কয়েকটি বাস যাত্রীদের নামিয়ে দিতে দেখা গেছে।
সিলেটগামী ‘মিতালী’ পরিবহনের চালক জাহাঙ্গীর আলম। তিনিও তার বাসে যাত্রীদের ডেকে ডেকে তুলছিলেন। যাত্রী পরিবহনের কারণ জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর বলেন, তার বাড়ি সিলেটে। লকডাউনের সময় ঢাকায় থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। এই সময়টা বাড়িতে থাকতে চান তিনি। তাই পর্যাপ্ত যাত্রী পেলে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।
জাহাঙ্গীর আরও বলেন, সরকার গণপরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও মার্কেট, গার্মেন্টস, কলকারখানা সবই খোলা রয়েছে। এ অবস্থায় তাদের না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। পরিবারের ভরণ-পোষণ করতে পারছেন না। তার দাবি, কার্যকর লকডাউন করতে চাইলে সরকারকে শ্রমিকদের খাদ্যপণ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে।
হবিগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্যে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে পরিবারের তিন সদস্যকে নিয়ে এসেছেন লিয়াকত আলী। জানালেন, ঢাকার কেরানীগঞ্জে অটোরিকশা চালাতেন লিয়াকত। লকডাউন দিলে এসব যান চলাচল বন্ধ থাকে। তাই আগেভাগে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছেন তিনি।
ঢাকা মহানগর সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. জলিলুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, তাদের সংগঠনের কর্মীরাই দূরপাল্লার যানের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তাদের প্রত্যেককে যাত্রী পরিবহন করতে নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও কেউ কেউ যাত্রী পরিবহন করছে। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে তদারকি করতে হবে।
সায়েদাবাদ টার্মিনাল এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন সার্জেন্ট শাহজালাল। তিনি বলেন, দূরপাল্লার কোনো কোনো বাস যাত্রী পরিবহন করার জন্য চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা টার্মিনাল থেকে বাস বের হতে দিচ্ছেন না। তবে দুপুরের পর থেকে সায়েদাবাদ টার্মিনালে দূরপাল্লার যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে।
এমএমএ/এমআরআর/এএসএম