স্থানীয় প্রশাসন লকডাউন দিতে পারবে : মন্ত্রিপরিষদ সচিব
হার্মফুল হলে বা কোনো স্থানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা আশঙ্কাজনক পর্যায়ে গেলে স্থানীয় প্রশাসন লকডাউন দিতে পারবে, তাদের সেই নির্দেশনা দেয়া আছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
সোমবার (৩১ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা বৈঠকে যুক্ত হন।
সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে লকডাউনের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিঠি পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘চিঠিটা এখনও পাইনি। অলরেডি ডেপুটি কমিশনার (ডিসি), সিভিল সার্জন, চেয়ারম্যান বা মেয়র; উনাদের বলেই দেয়া আছে, যদি আপনারা মনে করেন কোনো জায়গা হার্মফুল (করোনা সংক্রমণের ক্ষতিকর মাত্রা) হয়, সেক্ষেত্রে আপনাদের কমফোর্ট অনুযায়ী এটা (লকডাউন) করে দিতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘ইচ্ছা করলে স্থানীয় জেলা প্রশাসন লকডাউন ঘোষণা করতে পারবেন- উনাদের আগেই বলে দেয়া হয়েছে। যেমন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ, এটা কিন্তু ওখান থেকেই সাজেশন এসেছে।’
‘আমরা অন্যান্য ডিসট্রিক্টগুলোতে বলে দিয়েছি, যদি মনে করে পুরো ডিসট্রিক্ট না করে ওই বর্ডার এলাকা লকডাউন করতে হবে, সেটাও বলে দেয়া হয়েছে। যেভাবে উনারা সাজেশন দেবেন...।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘পাশাপাশি এতদিন ধরে লকডাউন, নর্থ বেঙ্গল এখন আমের মৌসুম। এই সময়ে যদি পুরোপুরি লকডাউন হয় তখন কী হবে। এগুলো বিবেচনায় আছে। তবে যদি হার্মফুল মনে করি তাহলে সেটা অবশ্যই....।’
মন্ত্রিসভার কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘ক্যাবিনেট ওই কথাই বলেছে, একটা লকডাউন চলছে, আর যদি কোনো লোকাল জায়গায় কোনোরকম মনে হয়। যেমন- গত বছরও আমরা কোনো কোনো জায়গায় (লকডাউন) করেছি।’
কিছু জেলায় অক্সিজেন সংকট রয়েছে- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘অলরেডি গত পরশু ডিজি হেলথকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, জেলাগুলোয় যেন তাড়াতাড়ি অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেন। আইসিইউ বা হাইফ্লো অক্সিজেন কীভাবে করা যায়, অথবা মেডিকেল কলেজগুলোতে সিরিয়াস পেশেন্টগুলোকে আগে শিফট করার চেষ্টা করেন। আর ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট হলে তাহলে তাদেরকে পৃথক করে রাখার জন্য চেষ্টা করেন।’
‘আরেকটা বিষয় আছে। এটা বারবার রিকোয়েস্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী এবং পুরো ক্যাবিনেট। আপনারা বারবার রিকোয়েস্ট করছেন কিন্তু তারপরও দেখা যায় অনেক লোক মাস্ক পরে না। এটা তো আমাদের সবাইকে কো-অপারেট করতে হবে। কারণ আমরা বারবার বলছি, এটা কমিউনিটি ডিজিস। আমাদের সবাইকে যার যার জায়গা থেকে আরও কেয়ারফুল হওয়ার সুযোগ আছে। আমরা যদি সবাই মাস্ক ব্যবহার করি, ডেফিনেটলি এটা কমে যাবে। সেজন্য আপনারা (গণমাধ্যম) কাইন্ডলি সবাইকে বলবেন, যে যেখানে আছে মাস্কটা যেন ব্যবহার করি, স্যানিটাইজার যেন ব্যবহার করি।’
কোয়ারেন্টাইনে থাকায় সাকিব ও মুস্তাফিজকে ধন্যবাদ
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘যথাসম্ভব বিয়ে বা এ জাতীয় অনুষ্ঠান যেমন বন্ধ আছে, আমরা নিজেরাও যেন এ বিষয়গুলোকে....। এর মধ্যে আমার কয়েকটা নলেজে এসেছে- মসজিদে গিয়ে ৪-৫ জন, তারপরে মেয়ের বাসায় গিয়ে বিয়ে পড়িয়ে বউ নিয়ে এসেছে। আমরা অ্যাপ্রিশিয়েট করি এবং ধন্যবাদ জানাই, যারা এ কাজগুলো করছেন।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘ভারত থেকে যারা আসছেন তারা সবাই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকছেন। ইভেন আমাদের দু-জন খেলোয়াড় ছিল- সাকিব (ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান) এবং মুস্তাফিজ (ক্রিকেটার মুস্তাফিজুর রহমান)। তারা প্রাকটিসে গেছে, ক্রিকেট বোর্ড বলার পর আমরা সাকিব এবং মুস্তাফিজকে বোঝালাম- তোমরা তো আমাদের সবার আইডলস। তোমরা যদি মানো তাহলে সবার জন্য সুবিধা। তারা ভালো কো-অপারেট করেছে। এজন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই- সাকিব এবং মুস্তাফিজকে।’
প্রসঙ্গ: এনআইডি কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্তের বিষয়
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রমটা নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেয়া হচ্ছে। সেটা নিয়ে সিইসি এবং অন্যরা প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটা তো অনেক আগের সিদ্ধান্ত। আমাদের কাছে সিদ্ধান্তটা কনভে করা হয়েছে। আমরা অ্যালোকেশন অব বিজনেস দেখছি। পুরোপুরির জন্য আমরা আবার মিটিং করবো।’
এতে জনগণের হয়রানি বাড়বে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তখন আমি ছিলাম না। আমি আসার আগে সিদ্ধান্ত হয়েছে। জিনিসটা আবার একটু দেখে, যখন বসবো, বলবো।’
আরএমএম/ইএ/এআরএ/জেআইএম/এমএস