ট্রাকের চাকায় কেঁপে ওঠে সুনসান জনশূন্য রাজপথ
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে সর্বোচ্চ দুই শতাধিক রোগীর মৃত্যুর খবরে জনমনে ভীতি ছড়িয়েছে। করোনা সংক্রমণের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি ও মৃত্যু রোধে সরকারি নির্দেশনায় ১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন চলছে। কঠোর লকডাউনের মধ্যেও নানা ঠুনকো অজুহাতে মানুষ ঘর থেকে দিন ও রাতে বের হয়েছে।
কিন্তু আজ বুধবার (৭ জুলাই) সপ্তমদিন শেষে রাতের ঢাকায় ভিন্ন চিত্র পরিলক্ষিত হয়। সন্ধ্যার পর থেকেই পাড়া-মহল্লার অলিগলি থেকে শুরু করে রাজপথে নেমে আসে মধ্যরাতের নিস্তব্ধতা। রাত ৯টা না বাজতেই সর্বত্র সুনসান নীরবতা। রিকশাচালকরা মোড়ে মোড়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করলেও যাত্রীর দেখা মেলে না। ব্যক্তিগত যানবাহনও দেখা যায় না বললেই চলে। চেকপোস্টে ব্যারিকেড থাকলেও তল্লাশির জন্য কাউকে দেখা যায় না।
করোনার রেকর্ডসংখ্যক মৃত্যুর দিনে রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীর ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, রমনা, কলাবাগান ও লালবাগের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়ে।
পরিদর্শনকালে অধিকাংশ রাস্তা জনমানবহীন, সুনসান নীরবতা চোখে পড়ে। তবে কিছুক্ষণ পর পর সুনসান নীরব রাজপথ কেঁপে ওঠে পণ্যবাহী ভারি ট্রাকের দ্রুতগতির চাকা আর হাইড্রোলিক হর্নের বিকট শব্দে। মাঝে মাঝে ভেপু বাজিয়ে রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স ছুটে যেতে দেখা যায়। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের সামনে হাতেগোনা দু/চারজন স্বজনকে ওষুধ ও ইনজেকশন কিনতে ফার্মেসিতে যেতে দেখা যায়।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে সায়েন্সল্যাবরেটরি মোড়ে বেশকিছু বড় বড় ট্রাক, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের যানজট দেখা যায়। সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখা যায়, পাথরবাহী একটি ট্রাকের চাকা ফেটে বসে যাওয়ায় বাটা সিগন্যালগামী রাস্তাটি কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ বন্ধ করে দেয়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন রাস্তায় কিছু সংখ্যক মানুষকে মসজিদ থেকে এশার নামাজ পড়া শেষে দাঁড়িয়ে গল্প করতে দেখা যায়।
বিভিন্ন শপিংমল ও মার্কেটের নিরাপত্তারক্ষীদের টুলে বসে ঝিমুতে দেখা যায়। মোড়ে মোড়ে অসংখ্য রিকশার দেখা মিললেও সে তুলনায় যাত্রী ছিল না বললেই চলে। কিছু কিছু ভ্রাম্যমাণ দোকানিকে সবজি ও ফলমূল নিয়ে বসতে দেখা গেলেও পুলিশের গাড়ি দেখলেই তাদের ভো দৌড় দিতে দেখা যায়। বিভিন্ন এলাকায় ফার্মেসিতে কিছু সংখ্যক মানুষকে মাস্ক পরে ওষুধ কিনতে দেখা যায়।
রাজধানী ঢাকায় ৯-১০টা তেমন রাত না হলেও করোনার কারণে কঠোর লকডাউনে ঢাকার চিত্রে মনে হয় যেন গভীর রাত।
এমইউ/ইএ