রংতুলির ছোঁয়ায় চূড়ান্ত প্রস্তুতি শহীদ মিনারে

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:০০ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২

শুক্রবার মধ্যদুপুর। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চৌহদ্দিতে রং ও তুলি হাতে দেয়াল লিখনে ব্যস্ত চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বিপরীতে দক্ষিণ পশ্চিম থেকে পূর্ব প্রান্ত জুড়ে লম্বাটে দেয়ালের টুকরো টুকরো অংশে কোথাও ‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা, ‘তোমার কোলে, তোমার বোলে, কতই শান্তি ভালোবাসা’, কোথাও ‘মাতৃভাষায় যাহার শ্রদ্ধা নাই সে মানুষ নহে’, আবার কোথাও ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়ির তীরে’ ইত্যাদি লেখনির ছোঁয়ায় মাতৃভাষা বাংলার ইতিহাস ও ঐহিত্যকে ফুটিয়ে তোলার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

অমর ২১ ফেব্রুয়ারির দিনটিতে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানটি গেয়ে ৫২’র ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চৌহদ্দি ও আশপাশের এলাকায় চূড়ান্ত প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দেয়াল লিখন ও রংতুলির আঁচড়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্নের লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। আর মাত্র একদিন পর অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাত ১২টার পর থেকেই রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, বিদেশি কূটনৈতিক দূতাবাসের কর্মকর্তা, মন্ত্রী, সচিব, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে শ্রদ্ধা জানাবেন।

jagonews24

এ উপলক্ষে গত বেশ কয়েকদিন ধরে শহীদ মিনারের ধোয়ামোছাসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম চলছে। আজ শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূল বেদীসহ আশপাশে রং করার কাজ প্রায় সম্পন্ন। হেমন্তের মিষ্টি রোদেলা মধ্যদুপুরে রংয়ের ওপর সূর্যের আলো পড়ে শহীদ মিনার ঝলমল করছে। চারপাশে শিকল ও বেড়া দিয়ে সাধারণ মানুষের যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে। আনসার সদস্যরা প্রবেশপথে পাহারা দিচ্ছেন।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অসংখ্য সিসিটিভি ও মাইক লাগানো হচ্ছে। ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে প্রতি বছর চারুকলার শিক্ষার্থীরা রং ও তুলিতে দেয়ালে লিখে থাকেন। শেষ মুহূর্তে এখন তারা সে কাজটিই করছেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা দিয়ে যারা যাতায়াত করছেন তারা শহীদ মিনার ও আশপাশের এলাকা থেকে খুব সহজেই বুঝে নিচ্ছেন অমর একুশ দরজায় কড়া নাড়ছে।

jagonews24

শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাবির অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান বলেন, চলমান করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে জনসমাগম এড়াতে গত বছরের ন্যায় এবারও সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচজন এবং ব্যক্তিপর্যায়ে সর্বোচ্চ দুজন একসঙ্গে শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে সবাইকে অবশ্যই যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

এছাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের উদ্দেশ্যে আসা সবাইকে করোনা টিকার সনদ সঙ্গে রাখার অনুরোধ জানান ঢাবি উপাচার্য।

এমইউ/এমএইচআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।