শিশুদের ভালো রাখতে হলে মায়েদেরও ভালো রাখতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩০ পিএম, ১৫ জুন ২০২২
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক

শিশুদের প্রতি যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ। শিশুদের জন্য যতটুকু করা দরকার তা আমরা পারছি না। তবে পৃথিবীর অনেক দেশেই শিশুদের অনেক বেশি যত্ন নেওয়া হয়, তারমধ্যে জাপান অন্যতম। জাপান তাদের শিশুদের জন্য সবচেয়ে বেশি খরচ করে। তারা জানে যে শিশুরাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমাদের দেশেও শিশুদের গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, শিশুদের ভালো রাখতে হলে মায়েদেরও ভালো রাখতে হবে। মায়েদেরও ভালো খাবার খেতে হবে। মায়েরা যাতে শিশুদের বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন সেজন্য সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। শিশুদের মায়ের দুধ খাওয়ালে আর কোনো কিছুর প্রয়োজন হয় না।

বুধবার (১৫ জুন) বিকেলে রাজধানীর শ্যামলীতে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে জাতীয় ভিটামিন ‘এ প্লাস ক্যাম্পেইন ২০২২’ -এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় শিশুদের ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ানোর মাধ্যমে ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভিটামিন এ দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। এটি শিশুর স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখে। ফলে শিশু রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা পায়।

তিনি বলেন, শিশুদের বাসায় তৈরি সুষম খাবার খাওয়াতে হবে। ফলমূল, শাকসবজি, দুধ, মাংস খাওয়াতে হবে। যাতে করে শিশুরা সুস্থ-সবল থাকতে পারে। আমরা আজ এই ক্যাম্পেইন শুরু করেছি এবং আশা করছি এটি সফলতার সঙ্গেই শেষ হবে।

জাহিদ মালেক বলেন, আমি মায়েদের কাছে আহ্বান করি আমাদের এই চারদিনের ক্যাম্পেইনে সঠিক সময়ে উপস্থিত হয়ে শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়াবেন।

করোনা প্রসঙ্গ টেনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন পুরো বিশ্বেই করোনা ছিল। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে, আমরা ভালো আছি। আমরা এরইমধ্যে ১৩ কোটি লোককে টিকে দিয়ে ফেলেছি। দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষ টিকা পেয়ে গেছেন। আমরা চাই যে আমাদের এই ভালো অবস্থান বজায় থাকুক। করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই বাংলাদেশে সবকিছু সুন্দরভাবে চলছে। এটি ধরে রাখার জন্য আমাদের মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, সচেতনভাবে চলা ও মানুষের ভিড় এড়িয়ে চলা- এসব দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এতদিন আমরা এসব ভুলেই গিয়েছিলাম, তবে এখন আর ভুলে থাকলে চলবে না। করোনা সংক্রমণ আবারো বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৩০ থেকে ৪০ জন করে এতদিন সংক্রমণ ধরা পড়লেও এখন সেটি ১০০ থেকে দেড়শো পর্যন্ত হয়ে যাচ্ছে।

জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন ১৫ থেকে ১৯ জুন প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে। প্রায় এক লাখ ২০ হাজার স্থায়ী ইপিআই কেন্দ্রের মাধ্যমে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। প্রতি কেন্দ্রে অন্তত দুজন করে দুই লাখ ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক এই কার্যক্রমে নিয়োজিত থাকবেছেন।

৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ২৪ লাখের অধিক শিশুকে লাল রঙের একটি করে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এছাড়াও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী এক কোটি ৯৬ লাখের অধিক শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এছাড়াও ১২ জেলার ৪৬ উপজেলার ২৪০টি ইউনিয়নকে দুর্গম এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে পরবর্তী চারদিন বাদ পড়া শিশুদের অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ) ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

এএএম/কেএসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।