বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের টিকিট কাউন্টারে বিক্রির দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৩ পিএম, ৩১ জুলাই ২০২২

মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের লক্ষ্যে নির্মিত আন্তর্জাতিক মানের স্থাপত্য কীর্তি বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের টিকিট কাউন্টারে বিক্রির দাবি জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা। তারা বলছেন, ঢাকার বাইরে থেকে যারা জাদুঘরে আসছেন, তাদের অনেকেই অনলাইনে টিকিট কাটা বোঝেন না, কিংবা ইন্টারনেট সংযোগ নেই। ফলে জাদুঘরের গেইট থেকেই তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে। তাই অফলাইনেও কাউন্টারে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। একই সঙ্গে টিকিটের সংখ্যা বাড়ানো দরকার। কারণ দর্শনার্থীদের তুলনায় টিকিট খুবই কম।

রোববার (৩১ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর বিজয় সরণিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের পশ্চিম পাশে ১০ একর জমির ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের গেইটের সামনে দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বললে তারা এ দাবি জানান।

সরেজমিনে দেখা যায়, জাদুঘরে ঢুকতে দীর্ঘ লাইন। কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে, কেউ বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। আবার কেউ কেউ এসেছেন জাদুঘরে রাখা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের নানা বিষয়ে জানতে। এ সময় দেখা যায়, অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে অনলাইনে টিকিট কিনার চেষ্টা করছেন। কেউ পাচ্ছেন, আবার কেউ পাচ্ছেন না। যারা ব্যর্থ হচ্ছেন তাদের গেইট থেকেই ফিরে যেতে হচ্ছে।

প্রবেশপথে টানানো রয়েছে নানা নির্দেশনা। এতে দেখা যায়, বুধবার ও সরকারি ছুটির দিনে বন্ধ থাকে বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর। এছাড়া শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। আর সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে জাদুঘরটি।

jagonews24'

জাদুঘর পরিদর্শনে সকালে তিন হাজার ও বিকেলে তিন হাজার টিকিট রাখা হয় দর্শনার্থীদের জন্য। টিকিট কাটতে হয় অনলাইনে। প্রতিটি টিকিটের মূল্য বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ৫০ টাকা, সার্কভুক্ত দেশের দর্শনার্থীদের জন্য ৩০০ টাকা এবং অন্য যেকোনো দেশের দর্শনার্থীদের জন্য ৫০০ টাকা।

পাবনা থেকে ঢাকায় একটি কাজে বাবার সঙ্গে এসেছেন মোহাম্মদ রাফি হোসেন শিপন। কাজ শেষ হয়ে গেছে দুপুরে। কিন্তু পাবনার বাস ছাড়বে রাত ১০টায়। এজন্য সময় কাটাতে ও মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাস জানতে বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে আসেন তারা। কিন্তু মোবাইলে ইন্টারনেট না থাকায় টিকিট না কেটেই গেইটের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন দুজন।

এ সময় জাগো নিউজকে শিপন বলেন, ঢাকায় একটি কাজে এসেছিলাম। রাতে আবার চলে যাবো। সময় পেয়ে জাদুঘরে এসেছিলাম। কিন্তু টিকিট অনলাইনে থাকায় কাউন্টার থেকে কোনো টিকিট পায়নি। মোবাইলেও ইন্টারনেট সংযোগ নেই, যার কারণে টিকিট কাটা সম্ভব হচ্ছে না।

রাজধানীর মিরপুর থেকে আসা আসলাম আহম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, সব দর্শনার্থী ডিজিটাল সিস্টেম বোঝে না, সবার কাছে যে ইন্টারনেট থাকবে সেটা নয়। গ্রাম থেকে আসবে তারা কী করে টিকিট পাবে? অনলাইনে টিকিট না কাটতে পেরে অনেকেই ফিরে যেতে হবে। তাই অনলাইনের পাশাপাশি কাউন্টারেও টিকিট বিক্রি করা উচিত।

তিনি আরও বলেন, তিন ঘণ্টা জ্যামে থেকে এসে দেখি কাউন্টারে টিকিট নেই। অনেকক্ষণ ধরে অনলাইনে টিকিট কাটার চেষ্টা করছি, কিন্তু পাচ্ছি না।

অনলাইনে টিকিট না পেয়ে এক নারী দর্শনার্থী বলেন, টিকিট কাটার জন্য অনেকবার চেষ্টা করলাম, কিন্তু অনলাইনে নিচ্ছে না। মানুষের তুলনায় টিকিটের সংখ্যাও অনেক কম। তাই দ্রুত শেষ হয়ে গেছে। টিকিটের সংখ্যা বাড়ানো ও কাউন্টারে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা থাকলে কাউকে না দেখে ফিরে যেতে হতো না।

কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা মো. নুরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, অনলাইনে টিকিট কাটার সিস্টেম রাখা হয়েছে। দিনে ছয় হাজার টিকিট অনলাইনে দর্শনার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে। সকালে তিন হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। বিকেলের তিন হাজার টিকিটও শেষ হয়ে গেছে। বিকেলের টিকিটগুলো খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়।

আরএসএম/আরএডি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।