বইয়েই ঘুমাতে চায় কলকাতার ক্লান্ত মেয়েটি

‘বৃষ্টির ঘাম, এবার থাম’। এমন মজার ছড়া ও নাকি মাত্র দুই বছর আট মাস বয়সেই বলে ফেলে। শুনে মা-বাবা তো অবাক! আধো আধো কথা বলতে পারে সবে। তাতেই এত মিষ্টি ছড়া! অমন মিষ্টি কথা বললেই বাবা-মা বেশ যত্ন করে লিখে রাখত। ও আর থেমে থাকেনি।
এগুলো হলো- কলকাতার মেয়ে উর্জা ইনামের কথা। এখন ওর বয়স দশ। গত বছর কলকাতার বই মেলায় ‘রূপকথার নগর’ নামে উর্জার একটি বইও বের হয়। এবার বাংলাদেশের একুশে বইমেলায় মেলাতেও তার নাকি একটি কবিতার বই বের হবে। সে জন্যই বাংলাদেশে আসা।
সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘দেশ’ পাবলিকেশন্স-এর স্টলে ওর দেখা মিললো। উর্জার মা নবনীতা বসু হক ওর সঙ্গ দিচ্ছে। বাবাও এসেছেন সঙ্গে। মা নবনীতা বসু কলকাতার একটি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান। বাবা ড. ইনামুল হক সেখানকার একটি সরকারি কলেজের শিক্ষক।
উর্জাকে নিয়ে আরো কয়েকবার বাংলাদেশের বইমেলায় এসেছেন তারা- জানালেন নবনীতা বসু। নিজের ভাষা বাংলা বলেই বাংলাদেশের প্রতি বিশেষ ভালোবাসা তাদের। একুশে মেলায় আসতে উর্জারও বেশ তাড়া। মেলার সময় এলেই নাকি বাংলাদেশে আসতে ওর অস্থিরতা বেড়ে যায়। মেলা ঘুরে প্রতিদিনই ব্যাগপুরে বই কিনে দিতে হয় ওকে। বই কেনায় থাকে নিজেদের পছন্দও। বাংলাদেশে এসেছেন মেলা শুরু হওয়ার দু’দিন পরেই।
সোমবার মেলা শুরু হওয়ার পরপরই উর্জাকে নিয়ে বের হতে হয়েছে বাবা-মাকে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বাংলা একাডেমি, এ স্টল থেকে ও স্টল, টই টই করে ঘুরে ও বড়ই ক্লান্ত। ‘দেশ’ প্রকাশনীর স্টলে এসে আর ধরে রাখতে পারেনি নিজেকে। স্টলে তাক করা সাজানো বইয়ের ওপরেই ক্লান্ত শরীরে ও যেন একেবারে লেপ্টে আছে। অনেকটাই আয়েশি ভঙ্গিতে বিশ্রামের চেষ্টা। বই বুকে জাপটে ধরেই ক্লান্তি নিবারণের প্রচেষ্টা উর্জার।
ক্যামেরায় ক্লিক করতেই চোখ মেলে ধরলো উর্জা। ঝটপট উঠে মায়ের পাশে দাঁড়িয়েই বলছিল, মেলার কথা, বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসার কথা।
উর্জা বলে, ‘বড় হয়ে আমি বাংলাদেশের ডাক্তার হবো।’ কেন বাংলাদেশের ডাক্তার হবে জানতে চাইলে বলে, ‘বাংলাদেশের অনেক মানুষ কলকাতায় ডাক্তার দেখানোর যায়। তাদের অনেকেই আমাদের বাড়িতে গিয়ে ওঠে। তাদের জন্য বড় কষ্ট হয়। এ জন্যই আমি বাংলাদেশে ডাক্তার হয়ে আসব।’
এএসএস/এসএইচএস/এবিএস