কুরিয়ার পরিষেবার অপরাধ
ভ্রাম্যমাণ আদালতের পরিবর্তে নিষ্পত্তি করতে চায় এনবিআর

কুরিয়ার সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের সংঘটিত অপরাধ নিষ্পত্তি ভ্রাম্যমাণ আদালতের পরিবর্তে নিজেদের আইনে করতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এবিআরের দাবি, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযোগ নিষ্পত্তি হলে বাণিজ্য উদারীকরণের বাধা হিসেবে বহির্বিশ্বে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছাবে।
এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সংস্থাটি বলছে, ডিএইচএল, ইউপিএস, ফেডেক্স এবং অন্যান্য বহুজাতিক লজিস্টিক ও কুরিয়ার সার্ভিসের মতো দেশের কুরিয়ার সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর অধীনে কাস্টমস বন্ডেড সুবিধা ব্যবহার করছে। এখন মেইলিং এবং কুরিয়ার পরিষেবা অপারেটরগুলো পোস্ট অফিস আইন, ১৮৯৮ এর অধীনে ২০১৩ সালের নভেম্বরে প্রবর্তিত মেইলিং অপারেটর এবং কুরিয়ার পরিষেবা বিধিমালা-২০১৩ এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়।
এদিকে দেশে শতাধিক কুরিয়ার সার্ভিস চালু থাকলেও মাত্র ৮০টির ব্যবসার লাইসেন্স রয়েছে বলে জানিয়েছে কুরিয়ার সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন>>> ব্যবসাবান্ধব আইন চান কুরিয়ার মালিকরা
এনবিআর বলছে, মেইলিং এবং কুরিয়ার সার্ভিস অপারেটর আইনের খসড়া অনুযায়ী মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ মেইলিং এবং কুরিয়ার সার্ভিস অপারেটরদের পরিচালিত অপরাধগুলো নিষ্পত্তি করার ক্ষমতা দিয়েছে, যা কাস্টমস আইন, ১৯৬৯ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এক্সপ্রেস কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পরিচালিত অপরাধ নিষ্পত্তির জন্য মোবাইল কোর্টের ক্ষমতায়ন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন চুক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কাস্টমস পর্যায়ে এক্সপ্রেস কুরিয়ার সার্ভিসের অনিয়ম নিষ্পত্তির জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছে এনবিআর।
এরই মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন মেইলিং অপারেটর এবং কুরিয়ার সার্ভিস লাইসেন্সিং অথরিটি দেশের মেইলিং ও কুরিয়ার সার্ভিস অপারেটরদের নিয়ন্ত্রণ করতে আইনের খসড়া তৈরি করেছে। প্রস্তাবিত খসড়া আইন-২০২২ এ মোট ৪৪টি বিধিসহ সাতটি ধারা স্টেকহোল্ডারদের পর্যালোচনার জন্য উন্মুক্ত।
খসড়া আইনে বলা হয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ ব্যবসা পরিচালনা করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা তিন মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
অপারেটরদের তাদের কুরিয়ার বা মেইলিং লাইসেন্স ব্যবহার করে অন্য শ্রেণির ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হবে না। মেইলিং অপারেটর এবং কুরিয়ার সার্ভিস লাইসেন্সিং অথরিটি অপারেটরদের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন বা বাতিল করার একমাত্র কর্তৃপক্ষের থাকবে।
আরও পড়ুন>>> সিলেট পাসপোর্ট অফিসে অভিযান, দুই দুলালের জরিমানা
এছাড়া খসড়া অনুযায়ী, কোনো পরিষেবা অপারেটর সরকার নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি চার্জ করলে তাদের ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা এক মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। অফিসে সার্ভিস ফি’র চার্ট ঝুলিয়ে না রাখলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা এক মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। নগদ লেনদেন বা বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের জন্য ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা তিন মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডের সম্মুখীন হতে হবে।
অস্ত্র ও মাদকের মতো নিষিদ্ধ পণ্যের লেনদেনের সঙ্গে কোনো অপারেটর জড়িত প্রমাণ হলে অস্ত্র বা মাদক আইনে কুরিয়ার সেবা প্রদানকারীদের শাস্তি পেতে হবে বলেও খসড়া আইনে উল্লেখ আছে।
এসএম/ইএ/জেআইএম