শিশুর অধিকার সুরক্ষায় আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে

শিশুর অধিকার সুরক্ষায় বেশি করে বিনিয়োগ করতে হবে উল্লেখ করে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ড. ইয়েন ফ্রাই বলেছেন, গত বছর আমি বাংলাদেশে গিয়ে শিশু ও যুবদের অনেক গল্প এবং বক্তব্য শুনেছিলাম এবং তাদের কাছে আমার জন্য অনেক শক্তিশালী বার্তা ছিল।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকার লেকশোর হোটেলে ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স (বিটিএস)- এর সহযোগিতায় শিশু ও যুবদের অংশগ্রহণ, উপস্থাপনা এবং জলবায়ু বিষয়ক আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশে শিশুদের জন্য এবং শিশুদের সাথে নিয়ে প্রচারাভিযান ‘জেনারেশন হোপ’ শুরু করেছে সেভ দ্য চিলড্রেন ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়।
তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই তাদের অধিকার, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষা, সহিংসতা ও দারিদ্র্য থেকে সুরক্ষায় বিনিয়োগ করতে হবে। আমাদের তাদের কথা শুনতে হবে এবং ব্যবস্থা নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিল একটি শিশু, কারণ এই ক্যাম্পেইনটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তাই ক্যাম্পেইন পরিকল্পনা থেকে শুরু করে সামনের বাস্তবায়ন পর্যন্ত সবকিছুই শিশুদের পরামর্শ নিয়ে করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
এ সময় বক্তারা জানান, ‘জেনারেশন হোপ’ একটি শিশু ও তরুণদের নেতৃত্বাধীন প্রচারাভিযান যা আগামী ৫ বছরের জন্য দেশব্যাপী বাস্তবায়ন করা হবে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘চাইল্ড হিয়ারিং’ সেশনের মাধ্যমে সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল ৪১টি দেশের ৫৪,৫০০ এরও বেশি শিশুর সাথে জলবায়ু পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা, ভবিষ্যতের জন্য তাদের আশা এবং এই সংকটগুলো সমাধানের জন্য কী করা দরকার বলে তারা মনে করে সে সম্পর্কে আরও জানতে কথা বলেছে।
সেইভ দ্য চিলড্রেন জানায়, বাংলাদেশে, প্রচারণার আনুষ্ঠানিক সূচনা করার আগে, সেভ দ্য চিলড্রেন একইভাবে সারা দেশের ৬টি জেলা থেকে ১২-১৮ বছর বয়সী ৫২৩৩ জন শিশুর সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের মতামত ও সুপারিশের সারসংক্ষেপ প্রতিবেদন হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রকাশ করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একটি ‘চাইল্ড হিয়ারিং’ সেশন প্রদর্শিত হয়েছ। সেখানে শিশুদের থেকে যে বিবৃতিগুলো এসেছে।
‘আমরা বিশ্বাস করি, অর্থনৈতিক বৈষম্য অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নারী ও মেয়েদের প্রভাবিত করে এবং এই প্রভাব কাটিয়ে উঠতে আরও সমর্থন প্রয়োজন এবং কম সামর্থবান ব্যক্তিদের ওপর এর বেশি প্রভাব পড়ে।’
তিনি বলেন, আমরা চাই প্রাপ্তবয়স্করা জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের পরামর্শ শুনুক এবং সে অনুযায়ী কাজ করুক। আমরা চাই প্রাপ্তপবয়স্করা আমাদের গুরুত্ব দিক এবং আমাদের ক্ষমতায়ন বাড়াতে বিশেষজ্ঞ এবং অন্যান্য অ্যাক্টিভিস্টদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নিশ্চিত করা হোক।
‘চাইল্ড হিয়ারিংয়ে’ শিশুদের কাছ থেকে সুপারিশগুলো প্রতিধ্বনিত হয়েছে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে ১২ বছরের শিশু আফসান মাহমুদ সৈকত বলেন, জলবায়ু সমস্যা সমাধানে আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিকল্পনাগুলি সঠিকভাবে প্রণয়ন দিকে নজর দেওয়া দরকার, আমরা চাই প্রাপ্তবয়স্করা অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করুক।
অনুষ্ঠানে জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং শিশুদের মুখোমুখি হওয়ার জন্য একটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় যেখানে উভয় পক্ষই জলবায়ু সংকট এবং প্রশমনের উপায়গুলোর ওপর আলোচনা করেন।
সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অনো ভ্যান ম্যানেন, ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. শামীম জাহান, তাসমিমা হোসেন- সম্পাদক- দৈনিক ইত্তেফাক ও চেয়ারপারসন, কার্যনির্বাহী কমিটি; ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স, ইফতেখার মামুদ- বিশেষ প্রতিবেদক, প্রথম আলো অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এএএম/এমআরএম/জিকেএস