সীতাকুণ্ডে ‘চাঁদা না দেওয়ায়’ অটোচালক খুন, গ্রেফতার ৪

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক একরাম হোসেন (২০) হত্যা মামলার সাড়ে চার মাস পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মূলত চাঁদার টাকা দিতে অপারগতা দেখানোয় একরামকে হত্যা করা হয়। এরই মধ্যে ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৪ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। সর্বশেষ শনিবার রিমান্ডে থাকা আসামির স্বীকারোক্তি মোতাবেক হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়।
মামলায় গ্রেফতাররা হলেন, সীতাকুণ্ড পৌসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড পেশকার পাড়া গ্রামের মো. জাহেদ হোসেন (২০), ৪ নম্বর ওয়ার্ড মধ্যম মাজেদ পুর ভুইয়া বাড়ির নূর আহাম্মদ (৪০), সীতাকুণ্ডের বারবকুণ্ড ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড তেলী বাজার মধ্যম মাহমুদাবাদ গ্রামের মো. মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে সাকিব (২০) এবং উত্তর মাহমুদাবাদ সমজি মোল্লা বাড়ির মো. ইসমাইল হোসেন ওরফে রানা (২৪)।
পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া আসামমি নূর আহাম্মদ সীতাকুণ্ড থানাধীন দক্ষিণ বাইপাস সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক। নূর আহম্মদের লাইনে সিএনজি অটোরিকশা চালাতে হলে প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। একরাম ওই লাইনে গাড়ি চালাতে গেলে নূর আহম্মদ চাঁদার ৫ হাজার টাকা দাবি করে। একরাম অপরাগতা প্রকাশ করলে তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়।
গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৫ সেপ্টেম্বর ভিকটিম একরামের ভাই নুরুল হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা করে। ভিকটিমের ডান হাতে, কাঁধে, পেটের ডান পাশে ছুরিকাঘাত করা হয় বলে পুলিশ সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করে।
দীর্ঘ সময়ে পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় পিবিআই স্বউদ্যোগে মামলার তদন্তভার নিয়ে ঘটনার প্রায় ৪ মাস ২২ দিন পর গত ২৬ জানুয়ারি ৪ আসামিকে সীতাকুণ্ড পৌরসভা ও বারবকুন্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। এরই মধ্যে চার আসামিকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করলে আসামি সাকিব ও রানাকে ৩ দিন করে এবং নুর আহাম্মদ ও জাহেদ হোসেনকে ৪ দিন করে পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার এস আই মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, শুরু থেকে মামলাটি ক্লুলেস ছিল। গত ২৬ জানুয়ারি আমরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৪ জনকে গ্রেফতার করি। পরে আদালতের আদেশে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিএনজি চালক একরাম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটিও উদ্ধার করা হয়েছে। মূলত লাইনে সিএনজি চালানোর দাবিকৃত চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় একরামকে হত্যা করেছেন আসামিরা।
ইকবাল হোসেন/এমআইএইচএস