‘কলাম লিখতে হলে জানার বিকল্প নেই’

‘কলাম লিখতে হলে প্রথমে নিজেকে তথ্য জানতে হবে। কলাম লিখতে হলে জানার বিকল্প নেই। একটি বিষয়ে লেখার আগে বিষয়টি সম্পর্কে সত্য-মিথ্যা জানতে হবে।’
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘কলাম লেখার রীতিনীতি, কৌশল শিখন ও অনুশীলন’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি ও জবির সাবেক উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত ও বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ড. তপন বাগচী।
কর্মশালায় সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, কলাম লেখার প্রথম কথা হলো আপনাকে পড়াশোনা করতে হবে। পড়াশোনা না করলে কলাম লেখা যাবে না। আপনি যে বিষয়ে কলাম লিখবেন, সে বিষয়ে প্রথমে আপনাকে জেনে নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কলাম লেখার ক্ষেত্রে একটি ডিসিপ্লিন মেনে চলা প্রয়োজন। আপনি কীভাবে শুরু করবেন সেটা আলোচনার বিষয়। কিন্তু একবারে ভালো লিখলেও হবে না, আবার একাধারে মন্দ লিখলেও চলবে না। পুরো বিষয়টির ভালো-খারাপ মিলিয়ে লিখতে হবে। এতে লিখার মান ও সামঞ্জস্য বজায় থাকে।
অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সামনে রেখে আমাদরে জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হবে। আগামীর বিশ্ববাজার দখল করবে তথ্য। জ্ঞান মানে হলো হাইপোথিসিস। জ্ঞান কখনো চূড়ান্ত সত্যের কথা বলে না। প্রতিটি সত্যই আপত সত্য। যতক্ষণ না পর্যন্ত পরবর্তী নতুন সত্য আবিষ্কৃত হয়। পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রগুলো স্থান, কাল, পাত্রভেদে পার্থক্য হয়।
তিনি আরও বলেন, যারা সত্য তথ্য ও ভুয়া তথ্যের মধ্যে পার্থক্য বুঝবে না তারা সমাজ থেকে ছিটকে পড়বে। তাই বিভ্রান্ত ও গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের লিখতে হবে। এর বিরুদ্ধে যদি আমরা না লিখি তাহলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। আমাদের লেখা প্রয়োজন, এর জন্য আমার এখনকার কলামগুলো ইংরেজিতে লিখি, যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিষয়গুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা জন্মে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, কলাম লেখা, রীতিনীতি, কৌশল শিখন বিষয়ক অনুশীলন কার্যক্রমটি একটি ভালো উদ্যোগ। আপনাদের এ আয়োজন করার জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসিম বানু বলেন, কলাম লেখার জন্য নিজেকে প্রথমে তথ্য জানতে হবে। তথ্যের ব্যাপারে সত্য-মিথ্যা যাচাই করতে হবে। মুক্ত লেখা মানেই আপনি সবকিছু লিখতে পারেন না। আপনি রাষ্ট্রের স্বাধীনতার মূলমন্ত্রের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারবেন না।
ড. তপন বাগচী বলেন, কলাম বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হয়। রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে হয়, রম্য চিন্তা নিয়ে হয়, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয় নিয়ে হয়। যে কথাগুলো বিস্তৃতভাবে বলা প্রয়োজন তা লেখায় হলো কলাম। কলামে তথ্যের ধারাবাহিকতা থাকতে হয়। কোন লেখাটি আগে লিখতে হবে, কোনটি পরে লিখতে হবে তা জানতে হয়। একজন কলামিস্ট যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে পারে, মতামত প্রকাশ করতে পারে। তার লেখা কারও ওপর চাপিয়ে দিতে পারেন না।
বিএ/জেআইএম