সিইসি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে অবান্তর বিতর্ক সৃষ্টি অনাকাঙ্ক্ষিত

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৫৫ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
নির্বাচন ভবনে কথা বলেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য মো. সাহাবুদ্দিনের কোনো আইনগত বাধা নেই। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির প্রশ্নে যদি এ ধরনের অবান্তর বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়, সেটি হবে অনাকাঙ্ক্ষিত।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, গত ১২ তারিখে আমরা রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন পেয়েছিলাম। সংসদের দুজন মাননীয় সদস্য প্রস্তাবক এবং সমর্থন করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি প্রার্থী তাতে সম্মত হয়ে তার স্টেটমেন্ট দিয়েছেন।

সিইসি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সংবিধান, সহায়ক আইন এবং সংশ্লিষ্ট বিধি অনুযায়ী আমাদের নির্বাচনটি পরিচালনা করতে হয়। বাছাইয়ের কাজটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার তথা নির্বাচনী কর্তার একক এবং অবিভাজ্য। এটি কমিশনের কোনো দায়িত্ব ছিল না। দায়-দায়িত্ব, ভুলভ্রান্তি সবকিছুর দায়ভার প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এককভাবে নিতে হবে।

একটি প্রশ্ন উঠেছে যে, প্রার্থীর সাংবিধানিক বা আইনগত অযোগ্যতা রয়েছে। এটা সত্য যে দুদক আইনে ৯ ধারায় বলা হয়েছে, কর্মাবসানের পর কোনো কমিশনার প্রজাতন্ত্রের লাভজনক কোনো পদে নিয়োগ লাভে যোগ্য হবেন না। এটা আছে। এটার আলোকে বিষয়টি বিবেচ্য। এতে করে অনেকে বলতে চেয়েছেন, রাষ্ট্রপতির পদটি একটি লাভজনক পদ।

‘আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচনী কর্তা হিসেবে ওই রায়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত ছিলাম। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে হবে, প্রার্থী যাই বলুক, কমিশনারেরও দায়িত্ব আছে বাছাই করে দেখার। আমরা দেখলাম, আইনগত কোনো অযোগ্যতা নেই। ৯ ধারায় (দুদক আইনের) বলেছে, কোনো লাভজনক পদে নিয়োগ লাভে যোগ্য হবেন না। আমরা কিন্তু এখান থেকে প্রার্থীকে নিয়োগ দান করিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দান করেননি। প্রধান বিচারপতিও নিয়োগ দান করেননি। কেউ নিয়োগ দান করেননি এবং কেউ নিয়োগ দান করতে পারেন না। উনি নির্বাচিত হয়েছেন। আইন তাকে নির্বাচিত করেছে প্রচলিত প্রথা অনুসরণ করে।’

সিইসি বলেন, আমাদের নির্বাচন এবং নিয়োগের মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে হবে। তাকে যদি এখান থেকে নিয়োগ দান করা হতো তাহলে সেটি অবশ্যই অবৈধ হতো। কারণ নিয়োগ দানের কর্তৃপক্ষ বা কর্তৃত্ব আমাদের নেই, কারোই নেই।

আরও পড়ুন: ইসলামী ব্যাংক পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করলেন সাহাবুদ্দিন

‘অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদ যখন রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন, তখন দায়িত্ব নেওয়ার আগেই এই বিষয়ে রিট মামলা হয়েছিল। সে মামলায় বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, শাহাবুদ্দীন আহমেদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পূর্ণ বৈধ। এতে কোনো অবৈধতা হয়নি। পদটি অফিস অব প্রফিট হলেও এটা অফিস অব প্রফিট ইন দ্য সার্ভিস অব দ্য রিপাবলিক নয়।’

সিইসি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের চূড়ান্ত একটি রায় বলে দিয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি যেমন, ঠিক তেমনি একজন অবসরপ্রাপ্ত দুদকের কমিশনার রাষ্ট্রপতি পদে কোনোভাবেই অবৈধ নন। সেদিক থেকে এই প্রশ্নে বিভ্রান্তি সৃষ্টি, বিভিন্ন ধরনের মতামত দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি অনাবশ্যক বা সমিচিন হবে না বলে আমি মনে করি। আমি আপনাদের মাধ্যমে বলতে চায়, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির প্রশ্নে যদি এ ধরনের অবান্তর বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়, সেটি হবে অনাকাঙ্ক্ষিত।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, বিচারপতি সাহাবুদ্দীন নির্বাচিত হয়েছিলেন, নিয়োগপ্রাপ্ত হননি।

সাংবিধানিক পদে নির্বাচন কমিশনাররাও রয়েছেন। তারা অবসরে যাওয়ার পর রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে যেতে বাধা থাকছে কি না, জানতে চাইলে সিইসি বলেন, আমাকে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়ে দেখেন, তখন আমি দেখবো সেটা গ্রহণ করতে পারবো কি পারবো না।

নির্বাচন করতে পারবেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মনে করি নির্বাচন করতে পারবো। আমার ব্যক্তিগত মত। সেই ক্ষেত্রে ওখানে যদি বলে আমি নিয়োগের অযোগ্য, তাহলে আমি একটি যুক্তি নিতে পারি যে, আমি নিয়োগের অযোগ্য কিন্তু নির্বাচনের অযোগ্য নই।

এইচএস/এমএইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।