বিড়ালছানার লোভ দেখিয়ে অপহরণ

৮ দিন পর ডোবায় মিললো আয়নীর বস্তাবন্দি মরদেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ১১:৩৩ এএম, ২৯ মার্চ ২০২৩
ডোবা থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ, ইনসেটে আয়নী

বিড়ালছানার লোভ দেখিয়ে অপহরণ করা শিশু আবিদা সুলতানা আয়নীর (১০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

বুধবার (২৯ মার্চ) ভোরে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানাধীন মুরগিফার্ম এলাকার একটি ডোবা থেকে বস্তাবন্দি মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় রুবেল নামে এক সবজি বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।

পুলিশের ধারণা, আয়নীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। গত ২১ মার্চ থেকে নিখোঁজ ছিল সে।

আরও পড়ুন: প্রেমিকার শর্ত পূরণে শিশু অপহরণ

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) নাইমা সুলতানা বলেন, মঙ্গলবার রুবেলকে আটক করি। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে আয়নীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি। ভোরে মুরগি ফার্ম এলাকার একটি ডোবা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় শিশুটিকে।

oroni-3.jpg

মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে পরিবারের অভিযোগ, ২১ মার্চ নিখোঁজের পর অপহৃত হওয়ার অভিযোগ এনে একাধিকবার থানায় গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। মামলা না নেওয়ায় শিশুর মা বিবি ফাতেমা বাদী হয়ে ২৮ মার্চ মঙ্গলবার আদালতে অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে শুনানি শেষে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ডের জন্য পাহাড়তলী থানাকে নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম নারী শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক শরমিন জাহান।

আরও পড়ুন: ঝালমুড়ির প্রলোভন দেখিয়ে শিশু অপহরণ, ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ওই শিশুর মা-বাবা দুজনেই পোশাককর্মী। মা চট্টগ্রামে আর বাবা ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। মা কর্মস্থলে থাকার সময় শিশুটি তার দাদুর সঙ্গে বাসায় থাকতো। কয়েকদিন আগে সে তার এক বান্ধবী বিড়ালছানা কিনেছে জানিয়ে তাকেও একটি কিনে দেওয়ার কথা বলে। এসময় তার মা বিবি ফাতেমা বেতন পেলে বিড়ালছানা কিনে দেবেন বলে জানান। এ অবস্থায় ২১ মার্চ আয়নী স্কুলে গেলে আর ফিরে আসেনি।

oroni-3.jpg

এরপর আয়নীর মা খবর পেয়ে বাসায় এসে মেয়েকে খুঁজে পাননি। পরে এলাকার একটি সিসিটিভি ফুটেজে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে আসামি রুবেল আয়নীকে বিড়ালছানা দেওয়ার নাম করে তার বাসায় নিয়ে যান। ফুটেজে দেখা যায়, রুবেল একটি বিড়ালছানা আয়নীর হাতে তুলে দিচ্ছেন। এরপর থেকে ওই শিশুর হদিস পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: ঋণের টাকা পরিশোধে শিশু অপহরণ করেন দুবাইফেরত রানা

বাদীপক্ষের আইনজীবী গোলাম মওলা মুরাদ জাগো নিউজকে বলেন, বিড়ালছানা কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ২১ মার্চ কাজীর দীঘি এলাকা থেকে শিশুটিকে অপহরণ করেন রুবেল। সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা গেছে রুবেল বিড়ালছানা দেখিয়ে আয়নীকে নিয়ে যাচ্ছেন। এরপর ভিকটিমের পরিবার থানায় জিডি করে।

আইনজীবী আরও বলেন, জিডির পর সন্দেহভাজন ওই অপহরণকারীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েও ছেড়ে দেয়। এছাড়া ভিকটিমের পরিবার থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেয়নি পুলিশ। ফলে মঙ্গলবার আমরা আদালতে ফৌজদারি অভিযোগ করেছি। আদালত অভিযোগটি শুনে এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দেন।

ইকবাল হোসেন/জেডএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।