মাদকের টাকা না পেয়ে বন্ধুকে খুন, সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশিত: ০৩:৫০ পিএম, ০২ এপ্রিল ২০২৩

রাজধানীর কোতোয়ালি থানার নবাবপুরে রজব আলী হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মিলন সিকদার ওরফে চাপা মিলনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। শনিবার (১ এপ্রিল) রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মাদকের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় বন্ধু রজব আলীকে হত্যা করেন মিলন।

রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি জানান, রজব আলী গ্রেফতার মিলন সিকদার ওরফে চাপা মিলনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। বাসা ছিল লালচাঁন মোকাল্লেম পাড়ায় এবং মিলনের বাসা ছিল যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া এলাকায়। তারা পরস্পর বন্ধু হলেও এলাকাভিত্তিক উঠতি বয়সের যুবকদের মধ্যে গ্রুপিং ছিল। রজব ও মিলন দুজনেই মাদকাসক্ত ছিলেন। তারা পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে এক সঙ্গে মাদক সেবন করতেন।

কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন জানান, একদিন মাদক সেবনের সময় তাদের হাতে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। তখন রজব আলী তাদের মাদক সেবনের সঙ্গী সজিব নামে একজনের মোবাইল জামানত রেখে মাদকের টাকা সংগ্রহ করে সবাই মিলে মাদক সেবন করেন। পরে জামানতের টাকা পরিশোধ না করেই জামানত দেওয়া মোবাইলটি দাবি করে। ওই ঘটনা কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে শত্রুতার সৃষ্টি হয়। পরে রায়সাহেব পাড়া এলাকার ছেলেরা জিকু নামের আরেক আসামির নেতৃত্বে মিলনসহ রহিম ওরফে আরিফ, আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে টাইগার, মন্টি, আকাশ ওরফে রাসেল, ফরহাদ হোসেন ওরফে ফরহাদ, সজিব আহমেদ খান, শাহীন চাঁন খাদেম ও মোহাম্মদ আলী হাওলাদার বাবু রজব আলীকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, ২০১১ সালের ২৪ জুলাই রাতে রাজধানীর কোতোয়ালি থানার নবাবপুরে মোবাইলের দোকানে রজব আলী টাকা রিচার্জ করতে গেলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জিকুসহ আরও ৪-৫ জন রজব আলীকে ঢাকা জজ কোর্টের পেছনে ১৬/এ কোর্ট হাউজ স্ট্রিটের পূর্ব পাশে নিয়ে ছুরিকাঘাত করলে রজব আলী রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। রজব আলীকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

পরে ওই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় করা মামলায় ২০১৯ সালে ১ আগস্ট মামলার রায় ঘোষণা করে আদালত। ওই রায়ে জিকু, রহিম ওরফে আরিফ ও আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে টাইগারকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এবং মিলনসহ ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেফতার মিলন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গাজীপুরে আত্মগোপনে চলে যান। পরে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকার পর ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গ্রেফতার হয়ে ৪ বছর জেল খেটে ২০১৫ সালে জামিনে বের হন। জামিনে বের হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন বাসে হেলপারি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ২০১৬ সালে নিজে গাড়ি চালনো শিখে বাসচালক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন তিনি।

গ্রেফতারের পর তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আরএসএম/এমআইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।