বিপুল মুসল্লির অংশগ্রহণে বায়তুল মোকাররমে হলো ৫ জামাত
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাতে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। সকাল ৭টা থেকে বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত মোট পাঁচটি জামাত হয় বায়তুল মোকাররমে।
শনিবার (২২ এপ্রিল) ফজরের নামাজের পর রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা ঈদের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ পড়তে বায়তুল মোকাররমে আসতে থাকেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বায়তুল মোকাররম ও এর আশপাশের এলাকা মুসল্লিদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে।
বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত সকাল ৭টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মসজিদে প্রবেশে সাড়ে ৬টার দিকেই মুসল্লিদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। দক্ষিণ গেট দিয়ে লাইন ধরে আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করেন।
মুসল্লিদের সারি মাওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম ছাড়িয়ে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার পর্যন্ত চলে যায়। প্রবেশ গেটে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর দেখা যায়।
অন্যান্য বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম মসজিদে ঈদুল ফিতরের ৫টি জামাত হয়েছে। প্রথম জামাত শুরু হয় সকাল ৭টায়। এতে ইমাম ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। মুকাব্বির ছিলেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের মুয়াজ্জিন ক্বারি মো. ইসহাক।
প্রথম জামাত সকাল ৭ টা ২৫ মিনিটে শেষ হয়। প্রথম জামাত শেষে মোনাজাতে মৃতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়। গুনাহ থেকে মাফ চেয়ে চোখের পানিতে মুসল্লিরা আল্লাহর কাছে আকুতি জানান।
এছাড়া মোনাজাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের নিহতদের আত্মার মাগফিরাত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
জামাতগুলো শেষে মুসল্লিদের একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা গেছে।
প্রায় প্রতিটি জামাত চলাকালীন বিপুল সংখ্যক মুসল্লি দক্ষিণ গেটের বাইরে রাস্তায় অপেক্ষায় ছিলেন।
পর্যায়ক্রমে সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জামাত, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায়, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি জামাতে ৩০ মিনিটের মতো সময় লেগেছে।
বায়তুল মোকাররম মসজিদের খাদেম আবদুর রহিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভোর থেকেই মুসল্লিরা ঈদের নামাজ পড়তে আসছেন। প্রথম জামাতে মুসল্লিতে কানায় কানায় ভরে যায় মসজিদ। তবে শেষের জামাতগুলোতে মুসল্লি অপেক্ষাকৃত কম ছিল।’
এক একটি জামাত শেষে মুসল্লিদের মসজিদের মধ্যে সেলফি তুলতে দেখা গেছে। মসজিদের মধ্যে অনেক বিদেশিকে ছবি তুলতে দেখা গেছে। বিদেশিরা মুসল্লিদের সঙ্গেও ছবি তোলেন।
বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের সামনে ঈদের নামাজকে কেন্দ্র করে বিপুল সংখ্যক ভিক্ষুকের উপস্থিতি দেখা গেছে। কেউ একজন কাউকে টাকা দান করতে গেলে হুমড়ি খেয়ে পড়ছিলেন অন্য ভিক্ষুকরা। এতে অনেককে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে দেখা গেছে।
দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হয়। ইমাম ছিলেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী। মুকাব্বির ছিলেন বায়তুল মোকাররমের খাদেম হাফেজ মো. আব্দুল মান্নান।
৯টার তৃতীয় জামাতের ইমাম ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির মাওলানা আবু ছালেহ পাটোয়ারী। বাতুল মোকাররমের সাবেক মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান এ জামাতের মুকাব্বির ছিলেন।
চতুর্থ জামাত হয় সকাল ১০টায়। এতে ইমাম ছিলেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক। মুকাব্বির ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের চিফ খাদেম মো. শহিদ উল্লাহ।
পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত শুরু হয় সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। এতে ইমাম ছিলেন বায়তুল মোকারমের পেশ ইমাম মাওলানা মুহিউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির হন খাদেম হাফেজ মো. জহিরুল ইসলাম।
আরএমএম/এমএইচআর/এমএস