আজিজ কো-অপারেটিভের সাবেক চেয়ারম্যানের জামিন বাতিল চেয়ে মানববন্ধন

আমানতকারীদের ১১২ কোটি টাকা পরিশোধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হতে চললেও সমবায় প্রতিষ্ঠান আজিজ কো-অপারেটিভের সাবেক চেয়ারম্যান এম. তাজুল ইসলাম কারও টাকা ফেরত দেননি। তাই শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে তাজুল ইসলামের জামিন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ক্ষতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আমানতকারীরা।
শনিবার (২৭ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধন থেকে তাজুল ইসলামের জামিন বাতিলের দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা বলেন, ২০০৪ সালে এম. তাজুল ইসলাম আজিজ কো-অপারেটিভের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন। এরপর তিনি পর্যায়ক্রমে ঢাকা, খুলনা, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে ১৫০টির অধিক শাখা খোলেন। এসব শাখার আমানত ঢাকায় এনে সিদ্ধিরগঞ্জে আজিজ কো-অপারেটিভ শপিংমলসহ কয়েকটি প্রকল্প নেওয়ার কথা বলা হয়। এসব প্রকল্পের নামে তাজুল ইসলাম তার বড় ছেলে, স্ত্রী ও ভাইয়ের নামে শাহবাগ, দিলকুশা ও নবাবপুর শাখা থেকে ঋণ নেন। এরপর ঋণের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে দেশের বাইরে দুই ছেলের কাছে পাচার করেন।
২০১৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সমবায় অধিদপ্তরের তৎকালীন যুগ্ম-নিবন্ধক দিদার উদ্দিন বাদী হয়ে তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করেন। মামলাটি পরে দুদকে হস্তান্তর করা হয়। ওই মামলায় তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। এরপর ২০১৯ সালের ১১ জুলাই এক গ্রাহকের করা মামলায় তাজুল ইসলাম গ্রেফতার হন। পরে সিআইডির করা মানি লন্ডারিং মামলা ও দুদকের মামলাসহ ৫০টির বেশি মামলায় কারান্তরীণ হন। এসব ঘটনায় প্রধান কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শাখা বন্ধ হয়ে গেলে আমানতকারীদের চাপে এলাকা ছাড়েন আজিজ কো-অপারেটিভের কর্মকর্তারা।
এদিকে, কারাগারে যাওয়ার পর বেশিরভাগ মামলায় জামিন পেলেও মানি লন্ডারিং মামলায় আটকে যান তাজুল ইসলাম। তিন বছর কারাভোগের পর গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জামিনের আবেদন করলে তাজুল ইসলামকে জামিন দেন আদালত। তবে ছয় মাসের মধ্যে আমানতকারীদের ১১২ কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে জামিন পান তিনি। আগামী ৪ জুন ৬ মাস পূর্ণ হবে। অথচ এখন পর্যন্ত তিনি আমানতকারীদের এক টাকাও ফেরত দেননি।
মানববন্ধনে প্রতিষ্ঠানটির সেক্রেটারি ও আমানত স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক এস এম হারুন অর রশিদ, পরিচালক ওসমান গনি ভূঁইয়া, মুস্তাফিজুর রহমান বাহার, সাইফুল ইসলাম, রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান রফিকুল ইসলাম, রংপুর বিভাগীয় প্রধান আব্দুস সালাম, খুলনা বিভাগীয় প্রধান আবুল হাসানসহ দুই শতাধিক আমানতকারী উপস্থিত ছিলেন।
এফএইচ/কেএসআর/জেআইএম