বিদ্যুৎখাতে দুর্নীতি
ওয়েস্ট জোন পাওয়ারের এমডিসহ ৩ জনের নামে মামলা

দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা উন্নত করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রিপেইড মিটার উৎপাদন, বাজারজাত ও প্রশিক্ষণের প্রকল্প নেয় সরকার। ওই প্রকল্পের ৩৩ কোটি ৪০ লাখ ২৪ হাজার ৩৭৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিদ্যুৎ কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলার আসামিরা হলেন- ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিক উদ্দিন, বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানির (বিএসইসিও) সাবেক পরিচালক (অর্থ) আব্দুল মোতালেব এবং বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানির সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়ে ওয়েনজুন। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ৫ (২) ধারা ও মানিলন্ডারিং আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
বুধবার (৩১ মে) দুদকের সহকারী পরিচালক তরুন কান্তি ঘোষ বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনায় মামলাটি দায়ের করেন।
আরও পড়ুন>> পায়রার আকাশে কালো মেঘ!
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে এলসি করে হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি কোনো প্রশিক্ষণ না দিয়ে ১৮ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৮ টাকা, রিপেয়ার ট্রেনিং বাবদ ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৬৭০ টাকা, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনিক্যাল সাপোর্ট সার্ভিস খাতের ৫ কোটি ৫২ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা, তিন বছরের ওয়ারেন্টি মিটারের জন্য বরাদ্দকৃত ৭ কোটি ২১ লাখ ৩২ হাজার ২৩৮ টাকা এবং প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনিক্যাল সাপোর্ট সার্ভিসের এক কোটি ২৯ লাখ ৯৭ হাজার ৩৫০ টাকাসহ বিভিন্ন খাতের ৩৩ কোটি ৪০ লাখ ২৪ হাজার ৩৭৯ টাকা আত্মসাৎ করেন।
আরও জানা যায়, সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা উন্নত করার জন্য দেশীয় ব্যবস্থাপনায় প্রিপেইড মিটার উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সরকারি মালিকানাধীন ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও চীনের হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি হিসেবে খুলনায় ‘বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসইসিও)’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। যার উদ্দেশ্য ছিল বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার সংযোজন, উৎপাদন ও বাজারজাত করা। তবে প্রিপেইড মিটার উৎপাদন ও বাজারজাত প্রক্রিয়ায় প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ করা টাকা লুটপাট হয়।
আরও পড়ুন>> রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে স্থাপিত হলো ‘কোর ব্যারেল’
বিএসইসিও’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য ৩ লাখ ৫০ হাজার ইউএস ডলার রাখা হয়। কিন্তু কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়নি। অপরদিকে বিএসইসিও’র ডিএমডি ইয়ে ওয়েনজুন এবং পরিচালক আব্দুল মোতালেব হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এলসির সব ডকুমেন্ট প্রদান করা হয়। ফলে হেক্সিং ইলেকট্রিক্যালে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বাবদ এলসিতে উল্লেখিত ৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার প্রাপ্তির সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিএসইসিও’র পরবর্তী অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত এমডি রতন কুমার দেবনাথ প্রিমিয়ার ব্যাংকের গুলশান শাখায় ওই অর্থ ছাড়ের বিষয়ে আপত্তি করেন। ফলে হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল এলসিতে বর্ণিত সফটওয়্যার ও সার্ভিস বাবদ কোনো অর্থ গ্রহণ করতে পারেনি।
এসএম/ইএ/জেআইএম