বিমানবন্দরে চোরাচালান রোধে প্রকল্প

ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, চট্টগ্রাম শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসহ যশোর ও সৈয়দপুর বিমান বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করতে যাচ্ছে সরকার।
এ জন্য মঙ্গলবারের একনেক সভায় বাংলাদেশ বিমান বন্দরসমূহের সেফ্টি এবং সিকিউরিটি ব্যবস্থার উন্নয়ন নামের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।
২৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। জুলাই ২০১৪ থেকে জুন, ২০১৭ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
সভা শেষে প্রকল্পটি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে বিদ্দমান বিমান বন্দরগুলোতে এয়ার ট্রাফিকের পরিমাণ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু উড়োজাহাজ পরিচালনা ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ব্যবস্থার উন্নয়ন সেভাবে তাল মিলিয়ে করা হয়নি। ফ্লাইট ইনফরমেশন রিজিয়ন এর কাজ সহজ করতে বিভিন্ন ধরনের রাডার প্রতিস্থাপন জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ এই রাডারগুলো ২৫ বছরের বেশি পুরোনো হয়ে গেছে যা ঠিকমতো কাজ করছে না। এজন্য ঢাকা ও চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের জন্যে প্রাইমারি সার্ভিলেন্স রাডার ও সেকেন্ডারি সার্ভিলেন্স রাডার সংগ্রহ করা হবে। অন্যদিকে যশোর ও সৈয়দপুর বিমান বন্দরের ২৫ বছরের পুরোনো কনভেন্সনাল ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি ওমনি ডাইরেকশনাল রেডিও রেঞ্জকে (সিভিওআর) আধুনিক ডপলার ভিওআর দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা হবে। এদিকে সোনা চোরাচালান রোধসহ সবধরনের চোরাচালান রোধ করতে হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে একটি কমপ্রিহেনসিভ সিকিউরিটি সিস্টেম গড়ে তুলা হচ্ছে। এর আওতায় বিমান পরিবহন সেবা কার্যক্রম আরও গণমুখী হবে। সেইসাথে, চোরাচালানও রোধ হবে।
এদিকে হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বোয়িং ৭৭৭, ৭৪৭ ও এয়ার বাস ৩৩০ এসব সুপরিসর উড়োজাহাজের উঠানামা ও চলাচল সহজ ও নিশ্চিত করতে অবকাঠামো উন্নয়ন করছে সরকার। ‘হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের আপগ্রেডেশন (১ম সংশোধিত)’ নামক একটি সংশোধিত প্রকল্পের আওতায় এ আপগ্রেডেশনের কাজ করা হবে। আজকের একনেক সভা সংশোধিত এ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটির ব্যয় ছিল ৪১৪ কোটি টাকা। জুলাই, ২০০৮ থেকে ডিসেম্বর, ২০১৫ মেয়াদে সংশোধিত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। মোট ব্যয়ের মধ্যে ৩২৮ কোটি টাকা ডেনিশ সরকার এবং বাকী ৮৫ কোটি টাকা সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে হবে। বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এটি বাস্তবায়ন করবে।
বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ১১ জেলার সাড়ে ৪ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছেন। এজন্য সরকার ১০ হাজার ৭শ কিলোমিটার নতুন বিদ্যুৎ লাইন ও ১ হাজার ৩শ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন পুনর্বাসন করছে। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা। আজকের একনেক সভায় এ সংক্রান্ত দুটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদিত এ প্রকল্প দুটি হচ্ছে ‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ বরিশাল বিভাগীয় কার্যক্রম-২’ এবং ‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ খুলনা বিভাগীয় কার্যক্রম-২’। পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্প দুটি নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিতরণ ও সঞ্চালনকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। এজন্যেই ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বাগেরহাট, যশোর, ঝিনাইদহ, খুলনা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, মেহেরপুর ও সাতক্ষীরা এই ১১টি জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ বাড়াতে আজকের একনেক সভায় প্রকল্প দু’টির অনুমোদন দেয়া হয়। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড প্রকল্প দু’টি বাস্তবায়ন করবে। জুলাই, ২০১৪ থেকে জুন, ২০১৮ মেয়াদে প্রকল্প দু’টি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্প দু’টির আওতায় ২৫টি নতুন বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রও নির্মিত হবে।
একনেক সভায় “দারিদ্র্য পীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচি (২য় সংশোধিত), “নতুন ডাকাতিয়া পুরাতন ডাকাতিয়া ছোট ফেনী নদী নিষ্কাশন (দক্ষিণ কুমিল্লা ও উত্তর নোয়াখালী সমন্বিত নিস্কাশন প্রকল্পের অংশ) (৫ম সংশোধিত)”, “ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশন প্রজেক্ট (১ম সংশোধিত)”, “জামালপুর-মাদারগঞ্জ সড়ক প্রস্তুতকরণ ও মজবুতীকরণ” এবং “গ্রামীণ রাস্তায় ছোট ছোট (১২ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত) সেতু/কালভার্ট নির্মাণ (৩য় পর্যায়) (২য় সংশোধিত)” নামক প্রকল্পগুলোও অনুমোদিত হয়। অনুমোদিত এ প্রকল্পগুলোর মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৯০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫৪৩৬ কোটি টাকা, প্রকল্প সাহায্য ২২৭৮ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৮৫ কোটি টাকা।