পত্নীতলায় আ.লীগ-বিএনপির পথের কাঁটা বিদ্রোহী ও জামায়াত
নওগাঁর পত্মীতলায় দ্বিতীয় দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রতীক পাওয়ার পরদিন থেকেই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য পদপ্রার্থীরা প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এলাকার রাস্তাঘাট, দোকান, অলিগলি ছেয়ে গেছে পোস্টারে।
জানা যায়, উপজেলার ইউপি নির্বাচনে মূল লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দলের বিদ্রেহী প্রার্থীরা। দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় বেকায়দায় রয়েছেন তাঁরা। অপরদিকে বিএনপি প্রার্থীদের জন্য নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর পাশাপাশি জামায়াতের প্রার্থীরাও পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এবার নির্বাচনে উপজেলায় ১১টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৪৪ জন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী আছেন সবকটিতে। জাতীয় পাটির প্রার্থী আছে একটি ইউপিতে। এছাড়া পত্মীতলা, কৃষ্ণপুর, আমাইড়, নজিপুর, আকবরপুর ও মাটিন্দর ইউপিতে আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। দিবর ও শিহাড়া ইউনিয়নে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী এবং আকবর ইউনিয়নে জামায়াতের প্রার্থী থাকায় বেকায়দায় রয়েছেন বিএনপির প্রার্থীরাও। কৃষ্ণপুর ও পাটিচর ইউনিয়নে দুই দলেরই বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। কেবল নির্মইল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই।
পত্মীতলার আমাইড় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে আ.লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এলাকায় মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম এবং আছি। চেয়ারম্যান হয়ে এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্য আমার প্রিয় দল আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু যে কারণেই হোক পাইনি। এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমি আমার জনপ্রিয়তা যাচাই করতে চাই।
একই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আ.লীগের প্রার্থী ইসমাইল হোসেন বলেন, আ.লীগের প্রার্থী বাছাই ভোটে হেরে গিয়েও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী থাকাতে বিএনপির প্রার্থী একটু সুবিধা পাবে। তারপরেও জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ন সম্পাদক আমিনুল হক কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আবু বক্কর সিদ্দিক।
আ.লীগ প্রার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও নৌকার ভোটে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না বলে আমার বিশ্বাস। এই এলাকায় নৌকার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। আগেও নির্বাচিত হয়েছি। আশা করছি, এবারও বিজয়ী হব।
দিবর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান শেখ গতবার বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হলেও এবার তাঁকে দল থেকে মনোনয়ন না দেওয়ায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে ভোটাররা অনেক সচেতন। এখন তারা প্রতীক দেখে ভোট দেবে না। যোগ্যতা ও সততা দেখে ভোট দিলে আমি আবারও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
এ ব্যাপারে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ইছহাক হোসেন বলেন, নেতা-কর্মীদের প্রত্যক্ষ ভোটের ভিত্তিতে আ.লীগের প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। এরপরেও যারা দলের সিদ্ধান্ত না মেনে প্রার্থী হয়েছেন তাদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রয়োজনে স্থায়ীভাবে দল থেকে তাদেরকে বহিষ্কার করা হবে।
আব্বাস আলী/এফএ/পিআর