মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী রোকনুজ্জামানকে কারাগারে নেওয়ার আদেশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৫৪ এএম, ০৪ অক্টোবর ২০২৩

একাত্তরের মহান মুক্তিযদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাতক্ষীরার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি খান রোকনুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

পলাতক আসামি হিসেবে গ্রেফতার করে আদালতে তোলার পর মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ও বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও কে এম হাফিজুল আলম।

আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় বিচার শেষে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি খান রোকনুজ্জামানকে (৭২) গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

গত শনিবার (১ অক্টোবর) দিনগত রাতে ঢাকার সাভার থেকে রোকনুজ্জামানকে গ্রেফতার করে র‌্যাব- ২ এর একটি দল। রোববার দুপুরে র‌্যাব- ২ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) শিহাব করিম এ তথ্য জানান।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে যুদ্ধাপরাধী রোকনুজ্জামানসহ রাজাকার বাহিনীর অন্যরা সাতক্ষীরা এলাকায় মুক্তিকামী মানুষের ওপর নির্যাতন, অপহরণ, লুট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধ করে। রাজাকার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য হিসেবে রোকনুজ্জামান মানবতাবিরোধী কাজে সরাসরি অভিযুক্ত।

যুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সাতক্ষীরা জেলায় পাঁচ ব্যক্তিকে গলা কেটে ও একজনকে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা, দু’জনকে ধর্ষণ ও ১৪ জনকে আটক করে নির্যাতনের মতো অপরাধে জড়িত ছিলেন।

এসব ঘটনায় ২০১৫ সালে সাতক্ষীরায় রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কার্যক্রম ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট থেকে শুরু করে ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে।

২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খান রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্ত শেষে তার ছয়জনকে হত্যা, দু’জনকে ধর্ষণ, ১৪ জনকে আটক ও নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগ আনা হয়। দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে সব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২২ সালের মার্চ মাসে রোকনুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।

এফএইচ/এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।