স্টেম ফিল্ড

বাংলাদেশি নারীদের অংশগ্রহণ নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সিম্পোজিয়াম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৫১ এএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩

স্টেম (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত) ফিল্ডের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশি নারীদের জন্য সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে ব্রিটিশ কাউন্সিল।

স্টেম ফিল্ডে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করার লক্ষ্যেই ৫ ডিসেম্বর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কান্ট্রি জেন্ডার অ্যাসেসমেন্ট ২০২১ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের সকল স্টেম পেশাজীবীদের মধ্যে নারীর সংখ্যা মাত্র ১৪ শতাংশ। যদিও নারী শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক উভয় পর্যায়ে পুরুষ শিক্ষার্থীদের তুলনায় ভাল করছে, তবে উচ্চশিক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ অনেক কম। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুসারে, আগামী দুই দশকের মধ্যে স্টেমবিষয়ক দক্ষতার প্রয়োজন নেই, নারীদের জন্য এমন চাকরি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, সরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাত্র ৩৮ শতাংশ এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাত্র ৪৫ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী স্টেম বিষয়ে পড়ালেখা করেন।

বাংলাদেশের সামনে এখন অর্থনৈতিক স্থবিরতা থেকে শুরু করে জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক মহামারী ও ক্রমবর্ধমান বৈষম্যসহ বিভিন্ন কঠিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তি-নির্ভর বিশ্বে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি দেশের উন্নয়ন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। স্টেম সংক্রান্ত পেশায় নারীদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

jagonews24

স্বাগত বক্তব্যে ব্রিটিশ কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক অ্যাড্রিয়ান চ্যাডউইক বলেন, স্টেম ফিল্ডে লিঙ্গবৈষম্য একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। নারীদের কর্মজীবনের তিনটি মূল ধাপে (সুযোগ, অগ্রগতি এবং নেতৃত্ব) পরিবর্তন নিয়ে আসার লক্ষ্যে কাজ করছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। যথেষ্ট সুযোগের অভাব (অ্যাক্সেস) স্টেম ফিল্ডে নারীদের তুলনামূলক কম প্রতিনিধিত্বের অন্তরায়। ২০১৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টেম বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভে দক্ষিণ এশিয়ার ১০০ জন নারীকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। অগ্রগতি নিশ্চিত করতে দক্ষিণ এশিয়ার সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বে কাজ করে যাচ্ছে এবং স্টেম ফিল্ডের নারীদের পেশাদার উন্নয়নে সহায়ক হবে এমন নীতি বাস্তবায়নে সাহায্য করছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। নেতৃত্বে বিকাশের জন্য মূল বাধাগুলো শনাক্ত করে নারীর ক্ষমতায়ন ত্বরান্বিত করার উপায় বের করতে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করে দক্ষিণ এশিয়ার এমন ১০০ জন নারীর পথচলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে ব্রিটিশ কাউন্সিল।

ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার এবং ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর ম্যাট ক্যানেল বলেন, যুক্তরাজ্যের নতুন শ্বেতপত্র (হোয়াইট পেপার) অনুযায়ী, উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। নারীরা প্রযুক্তি ভিত্তিক বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং সবার জন্য সমতাভিত্তিক টেকসই ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য নারীদের প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি বাস্তবায়নে একসঙ্গে কাজ করতে পেরে আনন্দিত। এ নীতি নারী ও মেয়েদের তাদের পরিপূর্ণ সম্ভাবনা বিকাশের জন্য ক্ষমতায়ন করবে।

প্যানেল আলোচনায় বক্তা হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক হাসিনা খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আব্দুস ছামাদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ওয়াইল্ড টিমের বোর্ড সদস্য ডা. আলিফা বিনথা হক।

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি, টেকস্টার স্যাটকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও টেকনো গ্রিন-কার্বন লিমিটেডের চেয়ারপারসন আনিকা আলী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মুস্তাক ইবনে আইয়ুব সিম্পোজিয়ামটি পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।

আইএইচআর/এসআইটি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।