১০০০ টাকার নোট ৪শ` টাকা!


প্রকাশিত: ০৪:১৪ এএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪

দেশের লেনদেনের সর্বোচ্চ নোট হচ্ছে ১০০০ টাকার। আর এই ১০০০ টাকার নোট পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৪০০ টাকায়। তবে এটি আসল নয়, জাল নোট।  ভালো নোটের সঙ্গে মিশিয়ে এই জাল নোট ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।

আর এসব জাল নোট তৈরি করে তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সদরঘাট, গুলিস্তান, ফার্মগেট, নিউমার্কেটের মত রাজধানীর কর্মব্যস্ত এলাকাগুলোতে।

সোমবার রাতে জাল নোট তৈরি ও বিক্রির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই যুবককে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মো. আরিফ ও মো. আশরাফ। এসব তাদের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করে র‌্যাব।

এব্যাপারে র‌্যাব-২ এর পরিচালক (সিও) লে: কর্ণেল কে এম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, জাল টাকার পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে আটককৃতরা ১০০০ টাকার ১০০টি নোট (এক লাখ টাকার একটি বান্ডিল) ৩৫-৪৫ হাজার টাকায় কিনতেন। সে হিসেবে প্রতিটি ১০০০ টাকার নোটের দাম পড়ে গড়ে সাড়ে তিন শ’ থেকে সাড়ে চার শ’ টাকা।

তিনি আরও বলেন, এই টাকা আবার যখন খুচরা বাজারে বিক্রির জন্য পাঠানো হয় তখন ১০০টি ১০০০ টাকার নোটের বান্ডিল প্রতি দাম পড়ে ৬০-৭০ হাজার টাকায়। সে হিসেবে ১০০০ টাকার একটি নোট বিক্রি হয় ৬০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকায়।

একসময় খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে ১০০০ টাকার জাল নোট ৪০০ টাকায় বিক্রি করা হতো। চাহিদা বেশি থাকায় বেশি দামে জাল নোট কিনছেন খুচরা বিক্রেতারা। বিভিন্ন সময় জাল নোট তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এসব তথ্য জানা গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

র‌্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উয়িং এর পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, জাল টাকা তৈরি থেকে শুরু করে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত তিন স্তরে বিভক্ত হয়ে সিন্ডিকেটভিত্তিক লোক কাজ করে। প্রথম ধাপে একটি চক্র জাল টাকা তৈরি করে। পরে জাল নোট প্রস্তুতকারীরা দ্বিতীয় স্তরের গ্রুপের কাছে কম মূল্যে জাল টাকার নোট বিক্রি করে। যারা পাইকারী বিক্রেতাদের জাল টাকা সরবরাহ করে। আর পাইকারি বিক্রেতারা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে জাল টাকা ছড়িয়ে দেয়। এভাবেই জাল টাকা তৈরি থেকে শুরু করে নিজস্ব লোকের মাধ্যমে তা সরাসরি রাজধানীর গুলিস্থান, যাত্রাবাড়ী, ফার্মগেট, সদরঘাট, নিউমার্কেট, কাওরান বাজার, গাবতলী ও মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেয়া হয়।

তিনি আরও জানান, নিরক্ষর, স্বল্পশিক্ষিত, বৃদ্ধ, কম আয়ের লোকজনকে লক্ষ্য করে এসব জাল নোট লেনদেন হচ্ছে।

র‌্যাব-২-এর সহকারি পরিচালক (গণমাধ্যম) সিনিয়র এএসপি মারুফ আহমেদ বলেন, গ্রেফতারকৃত জাল টাকা ব্যবসায়ী আরিফের বাড়ি পটুয়াখালী জেলায়। তিনি পটুয়াখালী থেকে ঢাকায় এসে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। পরে ঢাকার রায়েরবাগে থাকার সময় একটি মেসে আলাল নামের এক জালটাকা ব্যবসায়ীর সাথে তার পরিচয় হয়। আলাল তাকে জাল টাকার ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার জন্য প্রলোভন দেখায়। অধিক লাভের আশায় আলালের হাত ধরে আরিফ জাল টাকার ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। হাজার টাকার নোট ২৬০ টাকায় ক্রয় করে ৩০০-৪০০ টাকায় বিক্রি করতেন আরিফ।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে অপর জাল ব্যবসায়ী আশরাফ জানান, পোশাক কারখানায় কাজ করলেও আরিফের সঙ্গে আগে থেকেই তাঁর পরিচয় ছিল। সেই পরিচয়ের কারণে বেশি লাভের আশায় জাল নোটের ব্যবসা শুরু করেন তিনি। আরিফের কাছ থেকে জাল টাকা সংগ্রহ করে তিনি বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতেন।

এ ব্যাপারে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে শেরে বাংলানগর থানায় মামলা হয়েছে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।