গরমের তেজ নিস্তেজ যেখানে


প্রকাশিত: ০১:০৮ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০১৬

বিকেল সাড়ে চারটা। অস্ত যাওয়ার সমস্ত অায়োজন নিয়ে গ্রীষ্মের বেলাটি অনেকটাই ন্যুয়ে পড়েছে। কিন্তু তখনও রোদের তেজ প্রখর। বাতাস বইছে বটে, তাতে প্রাণ জুড়ায় না। একটু ছাঁয়ার পরশ পেতে কেউ রাস্তার পাশে গাছ তলায়, কেউবা আবার চায়ের দোকানে ঠাঁই নিয়েছে। তবে, ওদের আর অমন সুযোগ মেলে না। মেজাজ বিগড়ে যাওয়া গরমে ছোটদের নানা বিড়ম্বনার স্বীকার হতে হয়। তাতে আবার বস্তির ছেলে বলে কথা!

গরমে ওদের মন উড়ু উড়ু করে তুলেছে ভরদুপুরের আগেই। শাসন-বারণের ধার কখনই ধারে না ওরা। গ্যারেজে গাড়ি মুছে কিংবা হোটলের প্লেট ধুয়ে যাদের উদর পুরা, তাদের আবার শাসন-বারণ। সেই সকালে নেমেছে ওরা। চোখ দুটো লাল, যেন আগুনের গোলা। পরনে কারো প্যান্ট অাছে, আবার কারো কোমরে সামান্য সুতাটুকুরও বালাই নেই। গরম তাড়াতে পানিতে থৈ থৈ ঝড় তুলেছে। বিরক্তি নেই, কারো দিকে কারো তাকানোর সময়ও নেই। নদী থেকে ওপরে উঠলেও পরক্ষণেই মিলে যাচ্ছে পানিতে।

gaptoli

ঘটনাগুলো বৃহস্পতিবার রাজধানীর গাবতলীর দিয়াবাড়ি মোড়ে তুরাগ নদীর ‘দিয়াবাড়ি ঘাট’-এর। পানির কোনো রং না থাকলেও এখানকার পানির রং নিরেট কালো। নর্দামার পানি থেকে এখানকার পানি অালাদা করার জো নেই। শহরের ময়লা পানির ড্রেনযুক্ত হয়েছে এখানে।

ড্রেনের পানি নদীর পানির চাইতে একটু ঠান্ডাও বেশি! তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে অন্তত সে কথাই বলল টুটুল নামের ১০ বছর বয়সী এক কিশোর। টুটুল আব্দুলাহপুর থেকে ছেড়ে আসা মিনিবাসের হেলপার। দুপুরের খাবার খেয়ে ড্রাইভার গাড়িতে ঘুমালেও সে সঙ্গ দিচ্ছে অন্য ডুব কিশোরদের। বলছিল, ‘গরমে অার ভালো লাগে না। পানি পামু কই? তাই এ্যানেই ডুব দেই।’

gaptoli

টুটুলের কথায় সায় দিচ্ছিল আরেক কিশোর হৃদয়। হৃদয় গাবতলী একটি খাবার হোটেলে প্লেট ধোয়ার কাজ করে। গরমের তাপে আজ কাজে যাওয়া হয়নি ওর। বলে, ‘সকালে নেমেছি। গরমে উঠতে মন চায় না। কাজে গেলে অারো মরণ। দুপুরে খাইনি। তাও এ্যানেই ভালো আছি।’

উল্লেখ্য, বৈশাখের শুরু থেকেই দেশজুড়ে বয়ে চলছে তীব্র দাবদাহ। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধিসহ রাতের তাপমাত্রাও অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং তা আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

এএসএস/আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।