মৈত্রীর বন্ধন দৃঢ় হোক
যৌথ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খুলনা-কলকাতা রেলপথে বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভিডিও কনফারেন্সে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও উপস্থিত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার পর গণভবন থেকে এই ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। এ ধরনের ট্রেন সার্ভিস শুধু যোগাযোগের ক্ষেত্রেই নয় দুটি দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের জন্যও সহায়ক ভূমিকা রাখবে- এমনটি বলা যায় নিশ্চিত করেই।
উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বন্ধন শুধু দুই দেশের রেলের নয়, দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধন সৃষ্টি করে সার্বিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য। এতে দুই দেশের জনগণই লাভবান হবে।’ বাংলাদেশে আসার জন্য নরেন্দ্র মোদি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানান শেখ হাসিনা। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে থাকা মমতার উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দিদি, ইলিশ মাছ আছে। আসেন, খাওয়াব।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দেশের মানুষকে অভিনন্দন জানান। এ সময় তিনি বাংলায় বলেন, ‘আমাদের মৈত্রী ও বন্ধন আরও সুদৃঢ় হলো।’ মোদি বলেন, প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে প্রতিবেশির মতোই সম্পর্ক থাকা দরকার। দেখা-সাক্ষাৎ হওয়া দরকার। বন্ধন এক্সপ্রেস ও ননস্টপ মৈত্রী এক্সপ্রেস চালুর মাধ্যমে যাত্রীদের সুবিধা হবে বলেও মন্তব্য করেন মোদি। তিনি বলেন, এতে যাত্রার সময় প্রায় তিন ঘণ্টা বাঁচবে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দ্বিতীয় ভৈরব এবং দ্বিতীয় তিতাস সেতুও উদ্বোধন করা হয়।
প্রতি বৃহস্পতিবার ট্রেনটি কলকাতা থেকে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। বেলা ১টা ২০ মিনিটে আবার সেটি কলকাতায় ফিরে যাবে। ৪৫৬ জন যাত্রী এই ট্রেনের মাধ্যমে দুই দেশে যাতায়াত করতে পারবেন। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এসি কেবিন ২ হাজার (ভ্যাট, ট্রাভেল চার্জসহ) ও এসি চেয়ার ১ হাজার ৫০০ টাকা। উল্লেখ্য, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম মৈত্রী ট্রেন ঢাকা-দর্শনা-আগরতলা রুটে চালু রয়েছে।
ভারতের সাথে রয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে এ দেশের মানুষ। এছাড়া দুই দেশের মানুষের সাথেও রয়েছে ভাষা, সংস্কৃতির এক আত্মিক বন্ধন। বাংলাদেশের বহু মানুষ ভারতে চিকিৎসা নিতে যায়। ভারতের টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে একচেটিয়া চলে। ভারতের সাথে রয়েছে ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্পর্ক। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে এসেও দুই দেশের সম্পর্কের কথা স্মরণ করেছেন। এবং প্রতিবেশি দেশ হিসেবে একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার কথাও বলেছেন। নরেন্দ্র মোদির সময়েই স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। ছিটমহল বিনিময়ের পর ৬৫ বছরের লাঞ্ছনার অবসান হয়েছে। নিঃসন্দেহে এগুলো এক বিরাট ঐতিহাসিক অর্জন। এই ইতিবাচক ধারা ধরে রাখতে হবে। আমরা আশা করবো দুটি ভ্রাতৃপ্রতিম দেশে রেল সার্ভিস চালুর মধ্য দিয়ে মৈত্রীর বন্ধন আরো দৃঢ় হবে।
এইচআর/এমএস