মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা থেকে কবে মুক্তি?

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৪:১৪ এএম, ২২ নভেম্বর ২০১৭

দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের দুর্দশা কাটছেনা। চালের উচ্চ মূল্যের মধ্যেই সবজির দামও নাগালের বাইরে। এরমধ্যে পেঁয়াজের দাম অস্থিতিশীল। একবার লাফিয়ে বাড়ার পর কিছুদিন কম থাকলেও আবার বেড়েছে দাম। খুচরা দোকানে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজের দাম চাওয়া হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা।এক সপ্তাহ আগে যা ৭০-৭৫ টাকা ছিল। এমনকি ৫৫ টাকায় নেমেছিল পেঁয়াজের দাম। দাম বৃদ্ধির জন্য নানা অজুহাত দেখানো হচ্ছে। কিন্তু পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদও রয়েছে। তাই দাম বাড়ার বিষয়টি কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। এমনিতেই দ্রব্যমূল্য নাগালের বাইরে, তার ওপর পেঁয়াজের দাম বাড়ায় যেন বাজ পড়ছে ভোক্তাদের মাথায়। প্রশ্ন হচ্ছে এগুলো দেখার কি কেউ নেই?

দেশের মানুষের অতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে পেঁয়াজ একটি। বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২৪ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা আছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ আমদানি করা হয়, যার অধিকাংশই আসে ভারত থেকে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে গত বছর এ সময় প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ছিল ২৫ টাকা। দেশে গত মাসের শেষে পেঁয়াজের দর অনেকটা বেড়ে যায়। এরপর তা কমেছিল। এক সপ্তাহ ধরে পাইকারি বাজারে দাম আবার বাড়ছে।

কথায় আছে, দুর্জনের ছলের অভাব হয় না। ব্যবসায়ীদের আমরা দুর্জন বলতে চাই না। আর সব ব্যবসায়ীর দায়-দায়িত্ব এবং নীতিনৈতিকতাও একই পাল্লায় মাপা ঠিক হবে না। তবে একশ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ীর লাভ ও লোভের কারণেই যে পেঁয়াজের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। মুনাফালোভী এই মানসিকতা কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা সরকারের হাতে খুব একটা নেই। তারপরও টিসিবিকে কার্যকর করে একটি প্যারালাল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রেখে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা যায়। সরকার বলছে, পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। এরপরও পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বী হল কী করে। এক্ষেত্রে কী কারো কোনো দায়-দায়িত্ব নেই?

যে কোনো উসিলায় দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে আইন-কানুন নীতি-নৈতিকতার কোনো বালাই নেই এখানে। ভোক্তাদের পকেট কাটা হবে আর সরকার শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবে এটা হতে পারে না। বাজারে নজরদারি বাড়ানো এবং সিন্ডিকেটধারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। অবিলম্বে পেঁয়াজের মূল্য জনসাধারণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসতে যার যা করণীয় রয়েছে সেটি করতে হবে। এজন্য সরকার-ব্যবসায়ী সব পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। ত্যাগ করতে হবে মুনাফালোভী মানসিকতা।

এইচআর/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।