মিরপুরের পাখির হাটে মিলবে খরগোশও
দেশি-বিদেশি নানা জাতের পাখির হাট বসে রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরে। প্রতি শুক্রবার জমে ওঠে এই হাট। শাহ্ আলী স্কুলের সামনের সড়ক থেকে শুরু হয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার পথজুড়ে বিস্তৃত থাকে হাটের আয়োজন। দূর-দূরান্ত থেকে খাঁচায় পাখি আসে এই হাটে। হাটটি মূলত পাখিদের দখলে, তবুও সেখানে চোখে পড়ে কমবেশি বিভিন্ন জাতের মুরগি, বিড়াল আর খরগোশও। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম পুরো এলাকা। ছবি: মোহাম্মদ সোহেল রানা
-
পাখির হাট ঘুরে হঠাৎ চোখে পড়ে এক কোণে রাখা দুটি খাঁচায়। আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে গেলে দেখা যায়, খাঁচার ভেতরে কয়েকটি খরগোশ মেতে আছে দৌড়ঝাঁপে।
-
খাঁচার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তরুণ ক্রেতাদের কাছে খরগোশের নানা বৈশিষ্ট্য ও যত্নের ব্যাপারে তথ্য দিচ্ছেন। কথার ভিড়ে তাকে বলতে শোনা গেল, ‘এই খরগোশটি কিন্তু গর্ভবতী।’ খাঁচার ভেতর প্রাণচঞ্চল খরগোশগুলোর ছোটাছুটি আর নিষ্পাপ চাহনি যেন মুহূর্তেই মন ছুঁয়ে যায়। পাখির হাটে এসে এমন ভিন্ন দৃশ্য যেন দর্শনার্থীদের জন্য বাড়তি চমক।
-
আগ্রহ নিয়ে বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলতে বেরিয়ে আসে দারুণ এক উদ্যোক্তার গল্প। তার নাম মো. গগণ হাসান। গ্রামের বাড়ি বরিশালে হলেও বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে আশুলিয়ায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। জীবিকার তাগিদে সেখানকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। শুধু চাকরির আয়ে সীমাবদ্ধ থাকেননি গগণ, বাড়তি উপার্জনের আশায় ছাদ ভাড়া নিয়ে শুরু করেন একটি ছোট খামার। নিজের সীমিত সময় আর অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলেছেন নতুন স্বপ্ন।
-
চাকরির পাশাপাশি অবসর সময় খামারেই কাটে তার। ছাদের ওপর গড়ে ওঠা এই ক্ষুদ্র খামারে তিনি পালন করছেন দেশি-বিদেশি প্রায় ৩০টি খরগোশ। বিদেশি জাতগুলোর মধ্যে জাপানি খরগোশই বেশি। খরগোশ ছাড়াও তার খামারে আছে দেশি মুরগি ও কিছু পাখি।
-
ছোট উদ্যোগটি মোটেও শখ নয় বরং গত তিন বছর ধরে নিয়মিত পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের ফসল। চাকরির পাশাপাশি খামার সামলানো সহজ কাজ নয়। তবুও তিনি দুটো দিকই দক্ষতার সঙ্গে মেলাতে শিখে গেছেন। তার এই কাজে পরিবারের সদস্যদের অবদানও অনেক। তারাও সহযোগিতা করেন।