ছবিতে দেখুন এক গল্পকারের অদেখা জগৎ
বাংলাদেশের নাটক ও ওয়েব সিরিজের জগতে এমন কিছু নাম আছে, যারা দর্শকদের ভাবনার জগৎ বদলে দিয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম আশফাক নিপুন। আজকের দিনে জন্ম নেওয়া এই প্রতিভাবান নির্মাতা শুধু একজন পরিচালক নন, একজন গল্পকার, যিনি মানুষের অন্দরমহলের জটিলতা ফুটিয়ে তোলার জন্য দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। ছবি: আশফাক নিপুনের ফেসবুক থেকে
-
আশফাক নিপুনের শৈশব কেটেছে চট্টগ্রামে। স্কুলজীবনেই গল্পের প্রতি ছিল গভীর টান। সিনেমা হলে বসে ছবি দেখা কিংবা টেলিভিশনের নাটক দেখে মুগ্ধ হওয়া-সবকিছুর মধ্যেই তৈরি হয়েছিল এক অদৃশ্য আকর্ষণ। তবে জীবনের শুরুটা সহজ ছিল না। প্রকৌশল পড়াশোনা শেষ করে তিনি যখন মিডিয়ায় পা রাখেন, তখন সেটি ছিল একেবারেই নতুন চ্যালেঞ্জ।
-
বাংলাদেশি ওয়েব কনটেন্টের মানদণ্ড নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠছিল, তখন ‘মহানগর’ সিরিজ যেন আশার আলো দেখিয়েছিল দর্শকদের। চিত্রনাট্যের গঠন, সংলাপের বাস্তবতা এবং প্রতিটি চরিত্রের গভীরতা, সব মিলিয়ে এই সিরিজ প্রমাণ করেছে নিপুন কেবল পরিচালক নন, তিনি সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষকও।
-
নিপুণের ক্যামেরা শুধু দৃশ্য ধারণ করে না; এটি চরিত্রের মনের গোপন অস্থিরতাও প্রকাশ করে। তার কাজের বড় বৈশিষ্ট্য হলো বাস্তবতার সঙ্গে নাটকীয়তার নিখুঁত ভারসাম্য। এক রাতের গল্পে তিনি যেমন নগর জীবনের হাহাকার ফুটিয়ে তোলেন, তেমনি তুলে ধরেন ক্ষমতার অন্ধকার দিক।
-
আশফাক নিপুনের প্রতিটি চরিত্রের ভেতর থাকে এক ধরনের অপ্রকাশিত বেদনা। তিনি জানেন, মানুষ কখনো সাদা-কালো নয়, সবসময় ধূসর। আর সেই ধূসর দিকটাই তিনি পর্দায় জীবন্ত করে তোলেন। হয়তো এ কারণেই তার প্রতিটি কাজ দর্শকের মনে অদৃশ্য ছাপ ফেলে যায়।
-
তিনি বলেন, ‘গল্পের ভেতরেই মানুষের সত্যি লুকিয়ে থাকে।’ এ বিশ্বাসই তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছে।
-
নিপুনের কাজ শুধু বিনোদন নয়, সামাজিক বার্তা বহন করে। শহরের ভেতরে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাস, দুর্নীতি কিংবা সাধারণ মানুষের যন্ত্রণা তিনি নিখুঁতভাবে তুলে ধরেন। তার ওয়েব সিরিজগুলো যেমন আন্তর্জাতিক মানের প্রশংসা কুড়িয়েছে, তেমনি দেশীয় দর্শকদেরও বিশ্বমানের কনটেন্টের স্বাদ দিয়েছে।
-
আজ তার জন্মদিনে দর্শকের একটাই চাওয়া, আশফাক নিপুন যেন নতুন গল্পের ভুবনে আরও ডুব দেন। কারণ তার হাতে তৈরি প্রতিটি কাজ প্রমাণ করে, গল্প বলার ভাষা বদলাতে পারে একজন নির্মাতা। আর নিপুন সেই বদলের অন্যতম রূপকার।