শুধু কণ্ঠে নয়, কলমেও অনন্য এলিটা করিম
বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে এমন কিছু কণ্ঠ আছে, যেগুলো একবার শুনলেই চেনা যায়। সময় যতই পাল্টাক, সেই কণ্ঠের আবেদন ম্লান হয় না। এলিটা করিম তাদেরই একজন। আজ এই প্রতিভাবান শিল্পীর জন্মদিন। শুধু সংগীতে নয়-উপস্থাপনা, সাংবাদিকতা আর লেখালিখিতেও তিনি নিজের পরিচয় তৈরি করেছেন বহুমাত্রিক এক ব্যক্তিত্ব হিসেবে। ছবি: এলিকা করিমের ফেসবুক থেকে
-
ছোটবেলা থেকেই গান ছিল এলিটার জীবনের সঙ্গী। পরিবারে সাংস্কৃতিক আবহ তাকে সংগীতের দিকে টেনে আনে। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ধীরে ধীরে সবার নজরে আসেন।
-
এলিটার সংগীতজীবন শুরু হয়েছিল ব্যান্ড ‘ব্ল্যাক’-এর সঙ্গে। তাদের অ্যালবামে কণ্ঠ দেওয়ার মাধ্যমে আলোচনায় আসেন তিনি। পরে ধীরে ধীরে এককভাবে গাইতে শুরু করেন এবং নিজের আলাদা ভুবন তৈরি করেন। তার কণ্ঠে একদিকে যেমন আছে স্বচ্ছতা, অন্যদিকে আছে আবেগের ভরপুর প্রকাশ।
-
‘ঘুমঘুম চোখে’, ‘বৃষ্টির দিনে’, ‘তুমি চলে গেছ দূরে’-এমন অনেক গান আজও তরুণ প্রজন্মের প্লেলিস্টে জায়গা করে আছে।
-
শুধু গানে সীমাবদ্ধ থাকেননি এলিটা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতা করেছেন, বিশেষ করে ইংরেজি দৈনিক দ্যা ডেইলি স্টারে। সাংস্কৃতিক সাংবাদিক হিসেবে তিনি অসংখ্য লেখা প্রকাশ করেছেন, যেখানে সংগীত, নাটক, চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে দেশের শিল্প-সংস্কৃতির নানা দিক উঠে এসেছে। পাশাপাশি টেলিভিশনে উপস্থাপনার মাধ্যমেও তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।
-
এলিটার আরেকটি পরিচয় হলো লেখক। শিশুদের জন্য লিখেছেন গল্পের বই, আবার বড়দের জন্যও লিখেছেন ভিন্ন স্বাদের গল্প। তার লেখায় ফুটে ওঠে জীবনের খুঁটিনাটি, মানুষের সম্পর্ক, স্বপ্ন আর সংগ্রামের রূপকথা। সংগীতশিল্পী হয়েও এভাবে লেখালিখির ভুবনে প্রবেশ করা তাকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করেছে।
-
বাংলাদেশের সংগীতজগতে নারীদের পথচলা কখনোই খুব সহজ ছিল না। কিন্তু এলিটা করিম নিজের প্রতিভা, পরিশ্রম আর দৃঢ়তায় প্রমাণ করেছেন-একজন নারী শিল্পীও বহুমুখী ভূমিকায় সাফল্য অর্জন করতে পারেন। নতুন প্রজন্মের অনেক মেয়েই তাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখে।
-
আজ তার জন্মদিনে তাকে মনে করা মানে কেবল একজন গায়িকাকে স্মরণ করা নয়; বরং একজন লেখক, সাংবাদিক, উপস্থাপক এবং বহুমুখী প্রতিভাকে সম্মান জানানো। এলিটা করিম দেখিয়ে দিয়েছেন, সৃজনশীলতার কোনো সীমানা নেই। গান, লেখা আর উপস্থাপনার প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার ছাপ অমলিন থাকবে।