নতুন রূপে ক্লাসিক গল্প আলিবাবা ও চল্লিশ চোর
আগামী ৮ ও ৯ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল হলে মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে পদাতিক নাট্য সংসদের ৪৫তম প্রযোজনা ‘আলিবাবা এবং চল্লিশ চোর’। বিখ্যাত আরব্য রজনীর গল্প অবলম্বনে নির্মিত এই নাটকটির নাট্যরূপ দিয়েছেন উম্মে হানী এবং নির্দেশনা দিয়েছেন সুদীপ চক্রবর্তী। ছবি: পদাতিক নাট্য সংসদের সৌজন্যে
-
নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়নের মাধ্যমে দর্শকরা নতুনভাবে ফিরে পাবেন শৈশবের পরিচিত এক কল্পকাহিনির রূপ, যেখানে রোমাঞ্চ, বুদ্ধিমত্তা, ন্যায়বোধ ও মানবিকতার মিশ্রণে ফুটে উঠবে এক চিরন্তন গল্পের আধুনিক মঞ্চরূপ।
-
‘আলিবাবা এবং চল্লিশ চোর’ মূলত আরব্য রজনীর বিখ্যাত গল্পগুলোর একটি। কাহিনীর শুরু সম্রাট শাহরিয়ারের গল্প দিয়ে। নিজের স্ত্রীর বিশ্বাসঘাতকতায় তিনি এক নারীবিদ্বেষী শাসকে পরিণত হন। প্রতিদিন তিনি রাজ্যের একজন অবিবাহিত নারীকে বিয়ে করেন এবং শর্ত দেন যদি সারা রাত গল্প শুনিয়ে তাকে জাগিয়ে রাখতে না পারে, তবে ভোরে সেই নারীকে হত্যা করা হবে।
-
একসময় নিহত হতে হতে রাজ্যের প্রায় সব নারী শেষ হয়ে আসে। তখন পালা আসে উজিরের কন্যা শেহেরজাদের। বুদ্ধিমতি শেহেরজাদ শুরু করেন গল্প বলা।
-
এক রাত, দুই রাত, এভাবে পেরিয়ে যায় হাজার রজনী। শেহেরজাদের গল্প শুনে ধীরে ধীরে শাহরিয়ার পুনরায় মানবিকতায় ফিরে আসেন।
-
কথিত আছে, শেহেরজাদের বলা গল্পগুলোর মধ্যেই একটি ছিল ‘আলিবাবা এবং চল্লিশ চোর’। এই গল্পে কাঠুরে আলিবাবা হঠাৎ বনের গুহায় ডাকাতদলের গুপ্তধনের সন্ধান পায়। লোভে পড়ে তার ভাই কাসিমও যায় গুহায় এবং শেষ পর্যন্ত ডাকাতদের হাতে প্রাণ হারায়।
-
আলিবাবা ভাইয়ের দাফন সম্পন্ন করলেও ডাকাতরা তার সন্ধানে বের হয়। তারা ছদ্মবেশে আলিবাবার ঘরে প্রবেশ করে হত্যার ফাঁদ পাতে। কিন্তু আলিবাবার বুদ্ধিমতী গৃহকর্মী মার্জিনা, যিনি পরে তার পুত্রবধূ হন; কৌশলে তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেন।
-
শেষে সমাজের ন্যায়বোধ প্রতিষ্ঠার বার্তা নিয়ে গল্পটি শেষ হয়, ডাকাতদের আইনের আওতায় আনা হয় এবং তাদের লুট করা সম্পদ সাধারণ মানুষের মাঝে বণ্টন করা হয়।
-
পদাতিক নাট্য সংসদের এই নতুন প্রযোজনাটি কেবল একটি জনপ্রিয় লোককথার পুনরাবৃত্তি নয়; বরং এটি এক নতুন ব্যাখ্যা, যেখানে মঞ্চভাষায় তুলে ধরা হয়েছে সাহস, ন্যায়, মানবিকতা ও বুদ্ধিমত্তার জয়ের কাহিনি।