শিল্পী নয়, এক বিপ্লব-বিশাল দাদলানির সুরের পথে হাঁটার গল্প
বলিউড সংগীতের আকাশে কিছু নাম আছেন যারা শুধু গান তৈরি করেন না, তৈরি করেন একটি যুগ, একটি ধারা। বিশাল দাদলানি ঠিক তেমনই এক নাম। ‘ধুম’ ছবির থিম সংয়ে যিনি বাজিয়ে দিয়েছিলেন হাই-ভোল্টেজ গর্জন, তিনিই আবার ‘সুলতান’ এর সলো ট্র্যাকে ঢেলে দিয়েছিলেন অনুপ্রেরণার আগুন। রক ব্যান্ড ‘পেন্টাগ্রাম’ থেকে বলিউডের হিট মেশিন ‘বিশাল-শেখর’ হয়ে ওঠা তার যাত্রা যেন এক সুরেলা বিপ্লবের চিত্রপট। গানের জগতে তার উপস্থিতি মানেই কিছু ভিন্নধর্মী, সাহসী, আর সময়োপযোগী সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি। আজ তার জন্মদিনে ফিরে দেখা যাক এক সুরযোদ্ধার বর্ণাঢ্য জয়ের গল্প। ছবি: ফেসবুক থেকে
-
১৯৭৩ সালের এই দিনে ভারতের মুম্বাই শহরে তার জন্ম। শৈশব থেকেই সঙ্গীতের প্রতি ছিল তার গভীর ভালোবাসা। তবে তার যাত্রাটা শুরু হয়েছিল মূলধারার বলিউড নয়, বরং ভারতীয় রক ব্যান্ড ‘পেন্টাগ্রাম’-এর মাধ্যমে। এই ব্যান্ডে তিনি ছিলেন ভোকালিস্ট এবং খুব অল্প সময়েই তিনি হয়ে ওঠেন দেশের অল্টারনেটিভ রক মিউজিকের অন্যতম মুখ।
-
২০০০ সালের শুরুতে বিশাল দাদলানি এবং শেখর রবজিয়ানির মেলবন্ধনে তৈরি হয় বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক জুটি ‘বিশাল-শেখর’। এরপর থেকে বলিউডে একের পর এক হিট গান উপহার দিয়েছেন তারা।
-
‘ঝনকার বিটস’, ‘ওম শান্তি ওম’, ‘দোস্তানা’, ‘আনজানা আনজানি’, ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’, ‘ব্যাং ব্যাং’, ‘সুলতান’- এই ছবিগুলোর গানগুলো শুধু হিটই হয়নি, বরং সেই সময়ের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছিল।
-
বিশাল দাদলানির বিশেষত্ব হচ্ছে তিনি কখনোই এক ধারায় আটকে থাকেননি। রোমান্টিক গান, হাই বিট পার্টি সঙ্গীত, কিংবা রক ফিউশন-সবকিছুতেই ছিল তার স্বতন্ত্র ছাপ।
-
তার গলায় যেমন ‘ধুমাচক ধুম’ এর হাই এনার্জি শোনা যায়, তেমনি ‘তু আশিকি হ্যায়’ এর আবেগও গভীরভাবে ছুঁয়ে যায় হৃদয়।
-
বিশাল শুধু গানের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি একজন সমাজসচেতন ব্যক্তি। রাজনীতি, পরিবেশ, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়েও তিনি সোচ্চার। কখনো টুইটার পোস্টে, কখনো র্যালিতে, কখনো বা লাইভ কনসার্টে তিনি নিজের মত প্রকাশ করেছেন স্পষ্টভাবে। এই স্পষ্টবাদিতার জন্য অনেক সময় সমালোচিত হলেও, কখনোই পিছু হটেননি।
-
বিশাল দাদলানি এখন শুধুমাত্র একজন গায়ক বা সুরকার নন, বরং নতুন প্রজন্মের কাছে হয়ে উঠেছেন একজন গাইড, একজন পথপ্রদর্শক। ইন্ডিপেনডেন্ট মিউজিক সাপোর্ট করা, তরুণ শিল্পীদের সুযোগ দেওয়া এবং নিজের মিউজিকে তাদের তুলে আনা-এই কাজগুলো তিনি করে চলেছেন নিরলসভাবে।