বিশেষ দিনে জানুন তনুশ্রীর অজানা কিছু
রূপালি পর্দায় যাকে দেখে দর্শক মুগ্ধ হন, যার হাসিতে লুকিয়ে থাকে অনির্বচনীয় এক সৌন্দর্য, সেই তনুশ্রী চক্রবর্তীর জন্মদিন আজ। একদিকে অভিনয়ে দক্ষতা, অন্যদিকে ব্যক্তিত্বে একধরনের ভারসাম্য, যা তাকে আলাদা করে চেনায়। কিন্তু এই আলোচিত নায়িকার অনেক কিছুই আজও আমাদের অজানা। চলুন এই বিশেষ দিনে জেনে নেই তনুশ্রীর কিছু অজানা ও চমকপ্রদ দিক। ছবি: অভিনেত্রী ইনস্টাগ্রাম থেকে
-
১৯৮৪ সালের এই দিনে ভারতের কলকাতায় তার জন্মদিন।
-
শুধু গ্ল্যামার দুনিয়া নয়, তনুশ্রীর শুরুটা ছিল সম্পূর্ণ অন্যরকম। সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। ছিলেন একাধিক সংবাদমাধ্যমে রিপোর্টার।
-
সমাজের গভীর বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করার এই অভিজ্ঞতা পরে তার অভিনয়ের বাস্তবতাকেও আরও সমৃদ্ধ করে।
-
তনুশ্রীর প্রথম সিনেমা ‘ভুতের ভবিষ্যৎ’ হলেও দর্শকের নজরে আসেন তিনি ‘বাপি বাড়ি যা’ ছবিতে। এই ছবিতে তার চরিত্র ছিল তীক্ষ্ণ, স্পষ্টবাদী ও স্মার্ট-যেটা তখনকার বাংলা ছবিতে কমই দেখা যেত। অনেক সমালোচক বলেছিলেন, ‘এই মেয়েটি নায়িকার ফ্রেমে আটকে থাকবে না।’
-
তনুশ্রী চক্রবর্তী খুবই স্পষ্টভাষী এবং ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন মানুষ। তিনি কখনোই প্রথাগত ‘নায়িকা’ ইমেজে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি নায়িকা হতে চাইনি, মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়তে চেয়েছি।’
-
তনুশ্রীর ইনস্টাগ্রাম বা সোশ্যাল মিডিয়া দেখে যতই মনে হোক তিনি সবসময় ক্যামেরার সামনে থাকেন, বাস্তবে তিনি ভীষণ রকম একান্ত সময় পছন্দ করেন। পাহাড়-সমুদ্র কিংবা মফস্বলের পথ যেখানে ভিড় কম, সেখানেই তার প্রাণ খোলে। সময় পেলেই একা কোথাও বেরিয়ে পড়েন, বই ও প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটান।
-
বাংলা সিনেমার প্রচলিত নারীচরিত্র থেকে আলাদা কিছু করতে চান তনুশ্রী। নারীকে শুধুই প্রেমিকা বা স্ত্রী নয়, একজন পূর্ণ মানুষ হিসেবে দেখাতে চান পর্দায়। এজন্যই হয়তো তিনি ‘অন্তর্যাত্রা’, ‘দুর্গা সহায়’ এর মতো ছবিতে নিজের জায়গা করে নিতে পেরেছেন।
-
তনুশ্রী কেবল অভিনয়ের গণ্ডিতেই আটকে থাকেননি। তিনি সক্রিয় রাজনীতিতেও পা রেখেছেন। এমন এক সময়, যখন জনপ্রিয় অনেক তারকা এড়িয়ে চলেন সমাজ-রাজনীতির প্রসঙ্গ, তনুশ্রী সেই জায়গায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। অনেকের চোখে এটা সাহসী পদক্ষেপ।
-
তনুশ্রী বরাবরই ব্যক্তিগত জীবনকে আড়ালে রাখতে পছন্দ করেন। প্রেম, সম্পর্ক কিংবা বিয়ের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এইসব কিছুই জীবনের অংশ, তবে নিজের ভেতরটা যতদিন না পরিপূর্ণ হচ্ছে, ততদিন অন্য কাউকে জায়গা দেওয়া সম্ভব নয়।’ তার এই উত্তর অনেক নারীর জীবনবোধকেই শক্তি দেয়।
-
তনুশ্রী চক্রবর্তী শুধু রূপের মায়ায় বাঁচা এক নায়িকার নাম নয়। তিনি সাহসী, সচেতন, সংবেদনশীল এক মানুষ। যিনি জানেন কোথায় ‘না’ বলতে হয়, কোথায় নিজের স্বরটা জোরালো করে তুলতে হয়। তার অভিনয় যেমন নীরব সংলাপেও কথা বলে, তেমনি তার জীবনযাপনও হয়ে ওঠে অনুপ্রেরণার এক গল্প।
-
আজ তার জন্মদিনে শুভকামনা জানাই এই অসম্ভব সুন্দর ও দৃঢ়চেতা নারীকে। তিনি যেন আরও অনেক গল্প বলেন, আরও অনেক চরিত্রের ভেতর দিয়ে আমাদের চিনিয়ে দেন নতুন এক নারী-ভুবন।