বলিউডের ভিন্ন চরিত্রের কারিগর রণদীপ হুদা
বলিউডে গ্ল্যামার, প্রচারণা আর বাণিজ্যিক সিনেমা যখন সবার নজর কাড়ে; তখন এর বাইরে থেকেও নিজের অভিনয়গুণ দিয়ে দর্শকের মন জয় করেছেন রণদীপ হুদা। তিনি শাহরুখ, সালমান বা আমিরের মতো প্রচারণার আলোতে থাকেন না। অভিনয়ের ভিন্ন ধারা আর চরিত্র বাছাইয়ের অনন্যতায় সমালোচক ও দর্শকের কাছে বিশেষ জায়গা দখল করে আছেন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
-
১৯৭৬ সালের এই দিনে ভারতের হরিয়ানার রোহতক শহরে তার জন্ম। বাবা রণবীর হুদা চিকিৎসক। মা আশা দেবী সমাজকর্মী। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন সাহসী, স্বাধীনচেতা এবং একগুঁয়ে। পরিবার তাকে ডাক্তার বা প্রকৌশলী হিসেবে দেখতে চাইলেও রণদীপ নিজের জীবনকে ভিন্ন পথে গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন।
-
শৈশব ও কৈশোরে হোস্টেল জীবনে বড় হয়েছেন রণদীপ। পরে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান উচ্চশিক্ষার জন্য। সেখানেই মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস ম্যানেজমেন্টে পড়াশোনা করেন। অস্ট্রেলিয়ায় পড়ার সময় ট্যাক্সি চালানো থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্টে কাজ; সবই করেছেন খরচ চালানোর জন্য। সেই অভিজ্ঞতা তাকে জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করায়। যা পরে অভিনয়ে গভীর প্রভাব ফেলে।
-
ভারতে ফিরে আসার পর তিনি থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হন। নাসিরুদ্দিন শাহের থিয়েটার গ্রুপে কাজ করার মাধ্যমে অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়। ২০০১ সালে মীরা নায়ারের ছবি ‘মনসুন ওয়েডিং’ দিয়ে বলিউডে অভিষেক হয়। তবে বাণিজ্যিক সাফল্য আসতে দেরী হয়।
-
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২০১০ সালে ‘ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই’ ছবিতে সৎ পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসা পান। এরপর পেছনে তাকাতে হয়নি। রণদীপ হুদার ক্যারিয়ারের বড় বৈশিষ্ট্য হলো ভিন্ন ধরনের চরিত্র বেছে নেওয়া। তিনি কখনো কঠোর পুলিশ, কখনো খুনী, কখনোবা ভিন্ন মানসিকতার মানুষ হিসেবে পর্দায় হাজির হয়েছেন।
-
‘সাহেব বিবি অউর গ্যাংস্টার’ সিরিজে তার কাচা ও নিখুঁত অভিনয় দর্শককে চমকে দেয়। ‘হাইওয়ে’ সিনেমায় আলিয়া ভাটের বিপরীতে এক জটিল চরিত্র ফুটিয়ে তোলেন। ‘সর্বজিত’ ছবিতে ভারতীয় বন্দির ভূমিকায় নিজের শারীরিক ও মানসিক রূপান্তর ঘটিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়ান। ‘রাধে’ ছবিতে সালমান খানের বিপরীতে খলনায়ক হয়ে আবারও প্রমাণ করেন, যে কোনো চরিত্রেই সমান দক্ষ।
-
অভিনয়ের পাশাপাশি রণদীপ হুদা একজন ঘোড়সওয়ার ও পেশাদার পলো খেলোয়াড়। তিনি ভারতের অল্প কয়েকজন অভিনেতার মধ্যে একজন; যিনি আন্তর্জাতিক ঘোড়দৌড়ে অংশ নিয়েছেন। ব্যক্তিজীবনে খুব সাধারণ জীবনযাপন করেন। ব্যক্তিগত বিষয়গুলোকে আলোচনার বাইরে রাখাই তার স্বভাব।