শেরি শেফার্ড: ক্যামেরার সামনে যিনি ভাঙেন সমাজের অন্ধবিশ্বাস
টেলিভিশনের ঝলমলে দুনিয়ায় অনেকেই আসেন, কেউ হাসান, কেউ ভাবান, কেউ বা নীরবে হারিয়ে যান। কিন্তু কিছু মানুষ আছেন, যারা পর্দার সামনে থেকে সমাজের গভীরে ঢুকে নাড়া দেন প্রচলিত চিন্তাধারাকে। শেরি শেফার্ড ঠিক তেমনই একজন। যিনি শুধু অভিনেত্রী বা হোস্ট নন; তিনি একজন সচেতন কণ্ঠস্বর, একজন লড়াকু মানুষ, যিনি ক্যামেরার ঝলকে আলোকিত করেছেন সমাজের অন্ধকার কোণগুলো। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
-
আজ তার জন্মদিন। ১৯৬৭ সালের এই দিনে শিকাগো শহরে জন্ম শেরির।
-
কর্মজীবনের শুরুতে একাউন্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করলেও, তার হৃদয় পড়ে ছিল কমেডি আর অভিনয়ের জগতে।
-
নিজের সাহস আর হাস্যরসকে হাতিয়ার করে পা রাখেন স্ট্যান্ডআপ কমেডির মঞ্চে। তারপর একে একে টেলিভিশন সিরিজ, রিয়েলিটি শো, চলচ্চিত্র; সব জায়গায় রেখেছেন নিজের ছাপ।
-
২০০৭-১৪ সাল পর্যন্ত এবিসি-এর জনপ্রিয় টক শো ‘দ্যা ভিউ’- তে সহহোস্ট ছিলেন শেরি। সেখানে তিনি কেবল হোস্টিং করেননি বরং বহু বিতর্কিত সামাজিক বিষয়েও নিজের মত প্রকাশ করেন।
-
ধর্ম, লিঙ্গ, বর্ণ, স্বাস্থ্য, যৌনতা কিংবা নারী অধিকার সব কিছুতেই তার বক্তব্য স্পষ্ট এবং সাহসী।
-
সামাজিক গোঁড়ামির বিরুদ্ধে কথা বলাই ছিল তার টক শো জার্নির অন্যতম দিক।
-
শেরি সবসময়ই চেষ্টা করেছেন নিজের জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো নিয়েও খোলামেলা কথা বলতে। তিনি টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ে সচেতনতা তৈরি করেছেন, নিজের ওজন নিয়ে সংগ্রাম, একক মাতৃত্ব, মানসিক স্বাস্থ্য এসব বিষয়েও কথা বলেছেন সাহসের সঙ্গে।
-
‘এভরিবডি লাভস্ রেমন্ড’, ‘থার্টি রক’, ‘শেরি’, ‘ট্রায়াল অ্যান্ড এরর’-প্রতিটি সিরিজে তার চরিত্রে ছিল অভিনয়ের দক্ষতা ও অনন্যতা।
-
‘প্রেশাস’ এবং ‘ওয়ান ফর দ্য মানি’-তে তার অভিনয় দর্শকদের মন ছুঁয়েছে।
-
২০২২ সালে নিজের নামে শুরু হওয়া টক শো ‘শেরি’ তাকে এনে দেয় নতুন এক প্ল্যাটফর্ম। এখানে তিনি আরও খোলামেলাভাবে সমাজ, পরিবার ও ব্যক্তি জীবনের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন। এই শো যেন তার জীবনেরই প্রতিচ্ছবি; যেখানে আছে হাসি, কান্না, সংগ্রাম ও আশার গল্প।
-
শেরি শেফার্ডের জীবন দেখিয়ে দেয়, টেলিভিশনের আলো শুধু বিনোদনের জন্য নয়, তা সমাজ বদলানোর হাতিয়ারও হতে পারে।
-
ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে যিনি বলেন, ‘সব প্রশ্নের উত্তর হয় না, কিন্তু প্রশ্ন তোলা থেমে থাকা উচিত নয়’। শেরি শুধুমাত্র একজন অভিনেত্রী নন, তিনি সমাজ-পরিবর্তনের প্রতীক।