সেলিনা জেডের জন্মদিন আজ
সিনেমার পর্দায় একজন নারী যখন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লড়াই করে, কেবল নিজের বাঁচার লড়াই নয় বরং বিশ্বাস, শক্তি ও আত্মপরিচয়ের প্রতিনিধিত্ব করে তখন তাকে বলা যায় সত্যিকারের নায়িকা। এমনই একজন সেলিনা জেড; যিনি ‘হলিউড ও হংকং’ দুই পরিসরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে নিজের পরিচয় নির্মাণ করেছেন এক অপূর্ব ভারসাম্যে। লেখা: জান্নাত শ্রাবণী; ছবি: ফেসবুক থেকে
-
১৯৮৫ সালের এই দিনে হংকং শহরে তার জন্ম। বাবা রয় হো একজন বিখ্যাত চীনা মার্শাল আর্ট অভিনেতা ও কোরিওগ্রাফার, আর মা একজন ফ্রেঞ্চ-পোলিশ বংশোদ্ভূত ইউরোপীয় নাগরিক। বাবার কাছ থেকে পেয়েছেন লড়াইয়ের কৌশল আর মার্শাল আর্টের চর্চা, মায়ের কাছ থেকে শৈল্পিক মন ও ভাষার আধিপত্য।
-
সেলিনা জেড ক্যান্টোনিজ, ম্যান্ডারিন, ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষায় সাবলীল-যা তাকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও দৃঢ়ভাবে উস্থাপন করেছে।
-
মাত্র ১৪ বছর বয়সে সেলিনা বাবার কাছেই মার্শাল আর্ট শেখা শুরু করেন। শৈশবেই মঞ্চে বাবার সঙ্গে পারফর্ম করতে করতে তিনি ক্যামেরার সামনে থাকার আত্মবিশ্বাস তৈরি করেন। সেই আত্মবিশ্বাসই তাকে নিয়ে যায় সিনেমার দুনিয়ায়। তবে শুধু অ্যাকশন নয়, অভিনয়ের প্রতি তার গভীর অনুরাগ ছিল সবসময়।
-
২০০৭ সালে সেলিনা প্রথমবারের মতো নিজেকে বড় পরিসরে মেলে ধরেন। তার অভিনীত হংকং চলচ্চিত্র ‘লেজেন্ডারি অ্যাসাসিন’ এ তিনি একজন সাহসী নারী চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান। এই সিনেমার মাধ্যমেই তার আত্মপ্রকাশ মার্শাল আর্ট ঘরানার নায়িকা হিসেবে, কিন্তু তিনি নিজেকে শুধু অ্যাকশন হিরোইনে সীমাবদ্ধ রাখেননি।
-
তার ক্যারিয়ারের বড় টার্নিং পয়েন্ট আসে ২০১৭ সালে, যখন তিনি অভিনয় করেন ‘উলফ ওয়ারিয়র টু’ তে। এই সিনেমাটি ইতিহাস গড়ে চীনের অন্যতম সর্বাধিক আয়কারী চলচ্চিত্র হয়ে ওঠে, যেখানে সেলিনার চরিত্র ছিল এক সাহসী চিকিৎসকের, যিনি আফ্রিকায় যুদ্ধে আটকে পড়া নাগরিকদের সাহায্যে এগিয়ে যান।
-
সেলিনা জেড মূলত বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পান সিডব্লিউ-এর সুপারহিরো সিরিজ ‘অ্যারো’-এ শ্যাডো চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। এই সিরিজে তার চরিত্রটি ছিল এক প্রশিক্ষিত লড়াকু নারী, যে নায়ক অলিভার কুইনের প্রশিক্ষক এবং সহযোদ্ধা। এখানে তিনি অ্যাকশন ও আবেগের সমন্বয়ে এমন অভিনয় করেন, যা তাকে শুধু অ্যাকশন হিরোইন নয়, বরং একজন পরিপূর্ণ অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি এনে দেয়।
-
সেলিনা শুধুমাত্র পর্দার লড়াকু নন, ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি একজন পরিবেশ সচেতন, প্রাণিসমর্থক ও স্বাস্থ্য সচেতন নারী। তিনি নিরামিষভোজী এবং যোগব্যায়ামের অনুরাগী। প্রায়ইিএই নায়িকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বাস্থ্য, পরিবেশ এবং মানসিক সুস্থতা নিয়ে তার চিন্তাভাবনা তুলে ধরেন।