রেসিং ট্র্যাকে ব্র্যাড পিটের নতুন চমক, ‘এফ১’ সিনেমায় গতির গল্প
গতি, উত্তেজনা আর অনন্য অভিজ্ঞতার জন্য যারা সিনেমা দেখে থাকেন, তাদের জন্য হলিউডের নতুন উপহার ‘এফ১’। এই সিনেমায় কিংবদন্তি অভিনেতা ব্র্যাড পিটকে দেখা গেছে এক প্রাক্তন ফর্মুলা ওয়ান ড্রাইভারের চরিত্রে, যিনি আবার ফিরে আসছেন ট্র্যাকে। বাস্তব রেসিং ট্র্যাক, হাই-স্পিড ক্যামেরা আর জীবন্ত পারফরম্যান্সে তৈরি এই সিনেমা যেন দর্শকদের বসিয়ে রাখে সিটের কিনারায়। শুধু রেসিং প্রেমীদের জন্য নয়, সবার জন্যই এটি হতে পারে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া
-
‘এফ১’ সিনেমায় ব্র্যাড পিট অভিনয় করেছেন সানি হেইস নামে একজন অভিজ্ঞ কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত রেসিং ড্রাইভারের চরিত্রে, যিনি এক দুর্ঘটনার কারণে ক্যারিয়ার থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে গল্পের মোড় ঘোরে যখন তিনি ফিরে আসেন রেসিং জগতে, একটি নতুন দল ‘এপিএক্স জিপি’র হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। তার সঙ্গে যুক্ত হয় তরুণ ও প্রতিভাবান ড্রাইভার জোশুয়া পিয়ার্স (অভিনয়ে ড্যামসন ইদ্রিস)। অভিজ্ঞতা ও তরুণ শক্তির এই মিশ্রণেই গড়ে ওঠে সিনেমার মূল গল্প।
-
‘এফ১’ সিনেমার সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো এর বাস্তবতা। সিনেমার পরিচালক জোসেফ কোসিনস্কি, যিনি এর আগে ‘টপ গান: ম্যাভেরিক’ পরিচালনা করেছিলেন, এখানে বাস্তব রেসিং ট্র্যাকেই শুটিং করেছেন।
-
সিলভারস্টোন, মনজা, সুজুকা প্রভৃতি নামী গ্র্যান্ড প্রিক্স ট্র্যাকে ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছে রেসিং দৃশ্য। এমনকি ব্র্যাড পিট নিজেও চালিয়েছেন বিশেষভাবে ডিজাইন করা রেস কার, যেগুলোতে বসানো ছিল উন্নত মানের ক্যামেরা।
-
‘এফ১’ সিনেমার শুটিং চলাকালীন বাস্তব গ্র্যান্ড প্রিক্স ইভেন্ট চলছিল, ফলে আসল দর্শকদের মাঝেই হয়েছিল কিছু দৃশ্যের ধারণ-যা সিনেমায় বাস্তবতার ছোঁয়া এনে দিয়েছে অনন্যভাবে।
-
এই সিনেমার আরেকটি আকর্ষণ হলো প্রযুক্তির ব্যবহার। রেসিং কারের ভিতরে ও বাইরের দৃষ্টিভঙ্গি ধারণের জন্য বিশেষ ক্যামেরা ব্যবহৃত হয়েছে। সিনেমাটির নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে আইম্যাক্স ও ৪ডিএক্স প্রযুক্তি, যা দর্শকদের চোখে বাস্তব গতির অনুভূতি এনে দেয়। এ ছাড়াও, সিনেমার সাউন্ড ডিজাইন এবং ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর দর্শককে মুগ্ধ করে পুরো সময়জুড়ে।
-
বিশ্বখ্যাত ফর্মুলা ওয়ান ড্রাইভার লুইস হ্যামিল্টন এই সিনেমার সহ-প্রযোজক হিসেবে যুক্ত ছিলেন। তার অভিজ্ঞতা ও পরামর্শে সিনেমায় বাস্তব রেসিং দুনিয়ার নানা সূক্ষ্ম দিক উঠে এসেছে নিখুঁতভাবে। এমনকি বাস্তব ধারাভাষ্যকারদের অংশগ্রহণ এই সিনেমাকে আরও জীবন্ত করে তুলেছে।
-
ব্র্যাড পিট ছাড়াও সিনেমাটিতে রয়েছে শক্তিশালী পার্শ্ব চরিত্রের উপস্থিতি। ড্যামসন ইদ্রিসের চরিত্রটি তরুণ প্রতিভার রূপ দিয়েছে।
-
এছাড়া কেরি কনডন অভিনয় করেছেন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ‘কেট’ এর ভূমিকায়, যিনি শুধু প্রযুক্তিগতভাবে নয়, আবেগগত দিক থেকেও সানির পাশে থাকেন।
-
আরও আছেন জাভিয়ের বারডেম, টোবিয়াস মেনজিস, কিম বোডনিয়ার মতো অভিজ্ঞ অভিনেতারা, যারা প্রত্যেকে গল্পের ভিন্নমাত্রা এনেছেন।
-
‘এফ১’ সিনেমার আরেকটি চমক হলো এর সাউন্ডট্র্যাক। কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক হ্যান্স জিমারের স্কোর এই সিনেমায় রয়েছে, যার সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন ডোজা ক্যাট, এড শিরান, রোজে, টিয়েস্টো, পেগি গউ প্রমুখ তারকা শিল্পীরা। সংগীতের ছন্দে ও গর্জনে রেসিং দৃশ্যগুলো হয়ে উঠেছে হৃদয়কাঁপানো।
-
মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই এই সিনেমা আয় করেছে প্রায় ১৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ব্র্যাড পিটের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ওপেনিং। অ্যাপল অরিজিনাল ফিল্মস-এর প্রযোজনায় এটি তাদের প্রথম বক্স অফিস হিট সিনেমা হিসেবে ইতিহাস গড়েছে।
-
দর্শকরা সিনেমার ভিজ্যুয়াল, অভিনয় ও আবেগঘন মুহূর্তের প্রশংসা করেছেন। যদিও কেউ কেউ গল্পে আরও গভীরতা চেয়েছেন, তবে একটি অ্যাকশনধর্মী স্পোর্টস ড্রামা হিসেবে এটি বেশ প্রশংসিত হয়েছে।