খাসি-দুম্বায় জমজমাট কলকাতার পশুর হাট
ঈদুল আজহা ঘিরে ধর্মীয় আবেগ আর উৎসবের আমেজে মোড়ানো কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিট। নাখোদা মসজিদের পাশের অস্থায়ী পশুর হাটে নেই গরুর গর্জন, তবে তাতে কমেনি কেনাবেচার উত্তাপ। বরং খাসি আর দুম্বার বৈচিত্র্যেই জমে উঠেছে হাট। ছবি: ধৃমল দও
-
রাজস্থান থেকে আসা বিশালাকৃতির দুম্বা, উত্তর ২৪ পরগনার মোটা তাজা খাসি-সব মিলিয়ে শহরের এক প্রান্ত যেন রূপ নিয়েছে কোরবানির উৎসবের প্রাণকেন্দ্রে।
-
ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে ভিন্ন ভিন্ন গল্প, তবে প্রত্যাশা একটাই একটি সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও ত্যাগের মহিমায় ভাসা ঈদ।
-
৫ জুন সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ভিড়ে সরগরম হয়ে উঠেছে জাকারিয়া স্ট্রিটের অস্থায়ী পশুহাট।
-
কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ক্রেতাদের পাশাপাশি উপস্থিত হয়েছেন পশু ব্যবসায়ীরাও, কেউ এসেছেন পশ্চিমবঙ্গের হাবরা থেকে, কেউ আবার রাজস্থান বা বিহারের মতো দূর-দূরান্তের রাজ্য থেকেও।
-
রাজস্থানের মেওয়ার অঞ্চল থেকে ছাগল ও দুম্বা নিয়ে এসেছেন বিক্রেতা তাও সিং। তিনি জানালেন, ‘এই হাটে আমি মোট ৭০টি পশু এনেছি। এখন পর্যন্ত ৩০টি বিক্রি হয়েছে। আশা করছি, ঈদের আগেই সব বিক্রি হয়ে যাবে।’ তার স্টলে ২০ হাজার রুপির সাধারণ ছাগল থেকে শুরু করে ৫০ হাজার রুপি মূল্যের উন্নত জাতের দুম্বাও রয়েছে।
-
তবে হাটে সবাই সন্তুষ্ট নন। হাবরার এক খাসি বিক্রেতা আক্ষেপ করে বললেন, ‘যে দামে আমরা পশু কিনেছি, তার তুলনায় ক্রেতারা দাম দিতে চাইছেন অনেক কম। ২০ হাজারে কেনা খাসি ২২ হাজারে বিক্রি করতে চাই, অথচ ক্রেতারা বলছেন ১৫-১৬ হাজার! গতবারের তুলনায় এবারের বাজার অনেকটাই মন্দা।’
-
ক্রেতাদের কেউ কেউ আবার খুঁজছেন বড় আকারের খাসি বা দুম্বা। জাকারিয়া স্ট্রিটে দুম্বা কিনতে আসা মহম্মদ শামীম জানালেন, ‘বড় আকৃতির খাসি খুঁজছি, কিন্তু এখানকার দাম বেশ চড়া। একটি বড় খাসির দাম বলছে ১ লাখ ৪০ হাজার রুপি। তবে বছরে তো একবারই কোরবানির সুযোগ আসে, তাই একটু ভালোটাই কিনতে চাই।’
-
এদিকে ঈদকে ঘিরে শহরজুড়ে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা।
-
কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, কোরবানির দিন যেন কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে তারা কড়া নজরদারিতে থাকবে। শহরের বিভিন্ন স্থানে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি এবং মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স।
-
পশ্চিমবঙ্গ বরাবরই কোরবানির ঈদ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পালন করে আসছে।
-
এ বছরও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সচেষ্ট রাজ্য সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
-
উৎসব যেন সকলের হয়, এই বার্তাই পৌঁছে দিতে চায় শহর কলকাতা। কারণ ধর্ম হোক যার যার, উৎসব সবসময়ই সবার।