অপরূপ থাইল্যান্ডের ‘৯৯৯’ খেজুর বাগান

ব্যাংকক থেকে ওই বাগানে যাওয়ার পথে ১০০ কিলোমিটার পর ৭০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুধু গ্রাম আর গ্রাম। এ যেন সবুজের সমারোহ। এই গ্রামীণ এলাকার মাঝে বয়ে গেছে বড় বড় রাস্তা। বাংলাদেশের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চেয়ে বড় এই সড়ক। ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

সড়কের দুপাশে কোথাও নারিকেল বাগান, কোথাও হাজার হাজার তাল গাছের বাগান, আবার কোথাও পেঁপে, পেয়ারাসহ নানা সবজি বাগান দেখে খুব ভালো লাগে। প্রায় ১০ কিলোমিটারজুড়ে শুধু লবণ চাষ চোখে পড়বে। ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

এই এলাকার সব মানুষই কৃষির সঙ্গে জড়িত। এই পথ মাড়িয়ে যাওয়ার পথে খেজুর বাগানের ১০ কিলোমিটার আগে থেকে পথ নির্দেশনার জন্য খেজুরের ছবি সংবলিত বড় বড় সাইন বোর্ড টাঙানো আছে। ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

তপ্ত দুপুরে ক্লান্ত শরীরের গাড়ি থেকে নামার পর বিভিন্ন ধরনের তরতাজা খেজুর দেখে মনে হলো মুহূর্তে ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে। দেখা গেলো, অনেক কর্মচারী কাজ করছেন। কেউ খেজুর প্যাকেটজাত করছেন, কেউ খেজুর বাছাই করছেন আবার কেউ বাগান থেকে খেজুর সংগ্রহ করে নিয়ে আসছেন। ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

আমি, তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা শরীফ ও থাইল্যান্ডে বসবাস করা বাংলাদেশি নাগরিক হাসান ভাইসহ এখানে এসেছি। এরপর খেজুর বাগানের মালিক ষাটোর্ধ নারী নোকেন নোনক তার বাংলো থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

এরপর আমরা এই বিশাল খেজুর বাগান ঘুরে ঘুরে দেখলাম। হাসান ভাই থাই ভাষা বলতে পারেন। তার সঙ্গে ওই নারীর বাগান সম্পর্কে বিভিন্ন কথা-বার্তা হলো। ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

বাগান মালিক নোকেন নোনক জানান, ‘প্রায় ২০ বছর আগে ছোট পরিসরে দুবাই থেকে খেজুর গাছের চারা এনে বাগান শুরু করেন তিনি। ক্রমেই তার বাগানের পরিধি বাড়তে থাকে। এখন ৬০ একর জায়গাজুড়ে তার বাগান।’ ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

নোনক বলেন, ‘এখন তার বাগানে দুবাই, ইরান ও ইংল্যান্ড তিন দেশের তিন জাতের খেজুর গাছ ও খেজুর আছে। থাইল্যান্ডে চাহিদার প্রায় ৫০ ভাগ খেজুর সরবরাহ হয় এই বাগান থেকে।’ ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

শুধু খেজুর বিক্রি করে থেমে নেন তিনি, বিক্রি করেন খেজুর গাছের চারাও। দেশ-বিদেশের লোকজন এসে খেজুরের চারা ক্রয় করে নিয়ে যান। এখানকার এক একটি খেজুর গাছের চারার অনেক দাম। ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

ইরানের প্রতি পিস চারার মূল্য ১৩০০ বাত (বাংলায় প্রায় ৩৮০০ টাকা), দুবাইয়ের চারা ১৫০০ বাত (বাংলা টাকা ৪৮০০ টাকা), ইংল্যান্ডের চারা প্রতিপিস ১৮০০ বাত (বাংলা টাকা প্রায় ৫৮০০ টাকা) বিক্রি হচ্ছে। ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

বাগান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি গাছে খেজুর ঝুলছে। খেজুরগুলো গাছের মধ্যে পলিথিন দিয়ে মোড়ানো। কয়েকশ’ শ্রমিক বাগানে কাজ করছে। কেউ গাছ থেকে খেজুর নামাচ্ছেন, কেউ গাছের পরিচর্চা করছে আবার কেউ বা চারার পরিচর্চা করছে। ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

বাগানে তখনো বেশ কয়েকজন ক্রেতা দেখা গেলো। কেউ খেজুর ক্রয় করছে, কেউ চারা ক্রয় করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘৯৯৯’ এই খেজুর বাগান থেকে বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা এসে পাইকারি মূল্যে খেজুর কেনেন। ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

২০০-১০০০ বাত পর্যন্ত প্রতি কেজি খেজুরের দাম রাখা হয়। আবার অনেক খেজুর থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় পাইকারি ফল বাজার তালাক্ষায় আড়তে পাঠানো হয়। ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোহরা এগ্রো ফামর্স অ্যান্ড নার্সারির স্বত্বাধিকারী মো. ওমর শরীফ বলেন, ‘অনলাইনে দেখে ও বাগান মালিকের সাথে কথা বলে এখানে এসেছি।’ ছবি: এম মাঈন উদ্দিন

‘তবে আমি চিন্তা করতে পারিনি, আরব দেশ ছাড়া থাইল্যান্ডে এতো বড় খেজুর বাগান আছে। আমি মুগ্ধ হয়েছি। খেজুরগুলো খুব সুস্বাদু। তবে গাছের চারার দাম অনেক বেশি। তারপরও আমি ৫০০ চারার অর্ডার করেছি।’ ছবি: এম মাঈন উদ্দিন