ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে যায় শহরের গল্পগুলো
দুপুর গড়াচ্ছে। আকাশ হঠাৎ করে ঘন হয়ে আসে। সূর্যের সোনালি রোদের বদলে নেমে আসে ধূসর ছায়া। ঢাকার ব্যস্ত রাস্তাগুলো যেন মুহূর্তেই বদলে যায় এক ভিন্ন নাট্যমঞ্চে; যেখানে প্রধান চরিত্র বৃষ্টি, আর সহ-চরিত্র পথচারীরা। ছবি: মাহবুব আলম
-
ঝুম বৃষ্টি নামে ঠিক তখনই, যখন কেউ অফিস থেকে বেরোতে যাচ্ছেন, কেউ বা স্কুলগামী সন্তানকে আনতে দাঁড়িয়ে আছেন।
-
রিকশাচালক টান দিয়ে প্লাস্টিকের ছাউনিটা নামান, কিন্তু তার নিচেও ভিজে যায় পেছনের যাত্রী।
-
কেউ ছুটছেন সন্তান কোলে, কেউ রিকশা খুঁজছেন আতঙ্কিত চোখে, কেউ আবার দাঁড়িয়ে আছেন কোনো এক অচেনা ছাউনির নিচে, সেই ছাউনিটাই এই মুহূর্তে যেন সবচেয়ে আপন আশ্রয়।
-
তবে এই বৃষ্টির শহরে কিছু গল্প উষ্ণতাও ছড়িয়ে দেয়। ছাতা ভাগাভাগি করে ছুটে চলছেন দুই তরুণী। বন্ধুত্ব যে কেবল কফিশপ আর সিনেমা দেখা না, সেটা আবারও মনে করিয়ে দিল এমন দৃশ্য।
-
বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে যেন থেমে যায় শহরের কিছু গতি। এই বৃষ্টি শুধু শহর ভেজায় না, খুঁচিয়ে তোলে বহু আবেগও। অনেকে স্মৃতির ভেতরে হারিয়ে যান। কেউ ভালোবাসার মানুষকে মনে করেন, কেউ শৈশবের ছাদে ভিজে খেলা করার সময়কে। আর কেউ কেউ হয়তো চায়ের কাপে এক চুমুক দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন, ‘আহা, এমন দিনে যদি ছুটিই থাকত!’
-
বৃষ্টি ঢাকাকে শুধু নাকাল করে না, ঢাকাকে করে তোলে কবিতার মতো, গল্পের মতো। সেই গল্পে রয়েছে অসুবিধা, ক্লান্তি, কিন্তু তার ফাঁকে ফাঁকে থাকে মানবিকতার আলো, স্মৃতির ছোঁয়া আর এক ধরনের শহুরে সংবেদন।