ডাক্তারদের শাসনে রাখতে বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চেতে এমপিদের নিজ এলাকার সরকারি হাসপাতাল নিয়মিত পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদের সদস্যরা স্থানীয় সরকার প্রধান। পদাধিকার বলে হাসপাতালগুলোর গর্ভনিং বোর্ডের চেয়ারম্যানও এমপিরা। তাই এমপিদের হাসপাতাল নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা উচিত। অনেক ডাক্তার হাসপাতালে থাকেন না, তারা ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করছেন। এতে রোগীরা ভুক্ত ভোগী হচ্ছেন। মনে রাখতে হবে প্রতিটি রোগী এমপিদের ভোটার।
প্রতিটি বিভাগীয় শহরে শিশু হাসপাতাল
ফরহাদ হোসেনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে শিশু হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এর অংশ হিসেবে ঢাকা, রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল নির্মাণের কাজ চলছে।
মো. নবী নেওয়াজের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আলাদাভাবে দেশের সব উপজেলায় শিশু ওয়ার্ড খোলার কোন পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উন্নত চিকিৎসা সেবা বর্তমান সরকারের একটি অঙ্গীকার। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার পর্যায়ক্রমে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আর ৫০ শয্যায় উন্নীত সব উপজেলা হাসপাতালে শিশু ও চক্ষু চিকিৎসার বিশেষজ্ঞের পদ সৃজনসহ পদায়ন করা হচ্ছে। তাদের মাধ্যমে শিশুদের ও চক্ষু রোগীদেরকে বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে।
কাজী রোজীর অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অসচেতনতার কারণেই ব্রেস্ট, জরায়ুসহ নানাবিধ ক্যান্সারে মহিলারা আক্রান্ত হচ্ছেন। লজ্জা ভেঙে তাদের এগিয়ে আসতে হবে, তাহলেই ক্যান্সার মুক্ত করা সম্ভব।
মন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সরকার বিনামূল্যে ক্যান্সার পরীক্ষা নিরীক্ষা করার ঘোষণা দিয়েছিল। তখন জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে ১৯৯ জন দরিদ্র মহিলা পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়েছেন। এদের মধ্যে ১৪১ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত বলে চিহ্নিত হয়েছে। তাদেরকে সম্পূর্ণ ফ্রিতে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, এখন থেকে ডাক্তার ও মেডিক্যালের শিক্ষার্থীদের ড্রাগ মুক্ত হওয়ার অঙ্গিকার দিয়ে আসতে হবে। মাদক মুক্ত হওয়ার সনদ না পেলে তাদের মেডিক্যালে ভর্তি হতে দেয়া হবে না। পাশাপাশি ডাক্তারদের সার্টিফিকেট দিতে হবে তারা ধূমপান ছেড়ে দিয়েছেন বা ধূমপান করেন না।
বেগম নুর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ২৪৩টি সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে মোট ৯ হাজার ১৯২টি আসন রয়েছে। তিনি জানান, বর্তমানে দেশে ৩১টি সরকারি মেডিকেল কলেজে তিন হাজার ২১২টি আসন এবং ৬৬টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ৫হাজার ৯৮০টি আসন রয়েছে। আসন সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের বিবেচনাধীন রয়েছে।
এইচএস/এএইচ/পিআর