সংসদ নির্বাচন

মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩৩৬২, ইতিবাচক মনে করছে আওয়ামী লীগ

সালাহ উদ্দিন জসিম
সালাহ উদ্দিন জসিম সালাহ উদ্দিন জসিম , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৫৯ পিএম, ২১ নভেম্বর ২০২৩

টানা তিন মেয়াদে রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার ফলে আওয়ামী লীগে স্বভাবতই বাড়ছে স্বার্থের দ্বন্দ্ব। গ্রুপিং-সাব গ্রুপিংয়ে জর্জরিত দলটি। অন্তর্কোন্দলের ফলে নানা জায়গায় সংঘাতেরও ঘটনা ঘটেছে অনেক। এর মধ্যেই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের বিপরীতে দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩ হাজার ৩৬২ জন।

আসনপ্রতি দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী ১১ জনেরও বেশি। এত সংখ্যক মনোনয়নপ্রত্যাশী তৃণমূলে বিভাজন ও দ্বন্দ্বের কারণ হবে কি না- এমন প্রশ্ন ছিল দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে।

জবাবে তারা বলছেন, বিষয়টি ইতিবাচক। নেতিবাচক মনে করার কোনো কারণ নেই। আওয়ামী লীগের মতো বড় দলে এটি স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য হলো, দলীয় স্বার্থ ও সিদ্ধান্তে নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যান। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনেও তাই হবে।

আরও পড়ুন: আন্দোলন অব্যাহত রাখবে জামায়াতে ইসলামী

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এবার মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা ৩ হাজার ৩৬২ জন। বিষয়টি ইতিবাচক। আওয়ামী লীগের মতো বড় দলে এটি একদমই স্বাভাবিক।

jagonews24

দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম জাগো নিউজকে বলেন, নির্বাচন উৎসব-আনন্দের। আওয়ামী লীগ দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। যোগ্য, সৎ, একনিষ্ঠ ও ত্যাগী নেতা-কর্মীর অভাব আমাদের নেই।

বাহাউদ্দীন নাছিম আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনে সবাই অংশ নিতে ইচ্ছুক। সব সময়ই এ ধরনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা আসেন। এবারও আসছেন। এটাই হলো বড় ও জনপ্রিয় দলের নমুনা। এখানে নেতাদের আগ্রহ ও ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে। নেতারা নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। বাকিটা দলের সিদ্ধান্ত।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী জাগো নিউজকে বলেন, রাজনীতিতে প্রত্যেক ব্যক্তির প্রত্যাশা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। মনোনয়ন যে কেউ চাইতে পারেন। আওয়ামী লীগ অনেক বড় দল, এ দল নেতা-কর্মীর কারখানা। যোগ্য লোকের কোনো ঘাটতি আমাদের দলে নেই।

আরও পড়ুন: ইব্রাহিমের নেতৃত্বে আসছে নতুন সরকারবিরোধী জোট

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ একটি সুশৃঙ্খল ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল। আমাদের নেতা-কর্মীরা চেইন অব কমান্ড মেনে রাজনীতি করেন। শৃঙ্খলা ও ঐক্য বজায় রেখে কাজ করেন। সেখানে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। দল থেকে যাকে মনোনয়ন দেবে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সবাই তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।

গত শনিবার থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত টানা চার দিন মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে আওয়ামী লীগ। এতে ৩ হাজার ৩৬২টি ফরম বিক্রি হয়, যা থেকে আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

তবে আগের বারের তুলনায় এবার দলটির মনোনয়ন ফরম বিক্রি কম হয়েছে। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪ হাজার ২৩টি ফরম বিক্রি হয়েছিল। হিসাব অনুযায়ী, গত বারের তুলনায় এবার ৬৬১টি ফরম কম বিক্রি হয়েছে।

আরও পড়ুন: মনোনয়ন ফরম বিক্রি কমেছে আওয়ামী লীগের, দাম বাড়ায় বেড়েছে আয়

তবে আগের চেয়ে কম হলেও এবার মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে আওয়ামী লীগের আয় বেশি হয়েছে। এবার ফরমপ্রতি ৫০ হাজার টাকা হারে ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা আয় করেছে দলটি। ২০১৮ সালে তারা মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে আয় করেছিল ১২ কোটি ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। সেবার ফরমপ্রতি দাম ছিল ৩০ হাজার টাকা।

এবার গড়ে প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান ১১ জন। গত সংসদ নির্বাচনে প্রতি আসনের বিপরীতে দলটির মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন ১৩ জন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি হবে ভোট গ্রহণ। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে দলের মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম জমা দিতে হবে।

এসইউজে/এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।