প্রবাসী শ্রমিকদের সুরক্ষায় কুয়ালালামপুরে কর্মশালা
মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা নীতিমালা ও সুবিধা তুলে ধরতে কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে সচেতনতামূলক কর্মশালা। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) মালয়েশিয়ার সরকারি প্রতিষ্ঠান সামাজিক নিরাপত্তা সংস্থা এবং বাংলাদেশ হাই কমিশনের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালার মূল স্লোগান ছিল— ‘সহজে কাজ করুন, নিশ্চিন্তে থাকুন পারকিসকোর সঙ্গে’। অনুষ্ঠানে দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তা, পারকিসকোর প্রতিনিধি ও প্রবাসী শ্রমিকরা অংশ নেন। বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেন ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক ব্যারিস্টার মো. গোলাম সারোয়ার ভূইয়া, ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার মোসম্মাত শাহানারা মনিকা এবং শ্রম উইংয়ের কাউন্সেলর সৈয়দ শরিফুল ইসলাম।

মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন পারকিসকোর ডেপুটি চিফ এক্সিকিউটিভ অ্যাডমাউন্ড চেং পিংক হুয়াং এবং প্রবাসী শ্রমিক ইউনিট প্রধান হারিরি।
বাংলাদেশ ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ড জানায়, প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য রয়েছে ১৩ লাখ টাকার কল্যাণ স্কিম, মরদেহ পরিবহনে বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা, এবং নানামুখী সহায়তা। পারকিসকোর কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা সহায়তা, চিকিৎসা সুবিধা এবং সামাজিক নিরাপত্তা সুরক্ষার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে। কর্মশালায় ভিডিও প্রদর্শনের মাধ্যমে শ্রমিকদের এসব সেবা সম্পর্কে অবহিত করা হয়।

প্রায় অর্ধ-শতাধিক বাংলাদেশি শ্রমিক অংশ নেন কর্মশালায়। তারা জানান, এ ধরনের কর্মশালা তাদের সচেতন করে তুলেছে এবং অন্য শ্রমিকদেরও তথ্য জানাতে সহায়ক হবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এখনও নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। অনেক শ্রমিক যথাযথ তথ্য না পাওয়ায় সেবা গ্রহণে পিছিয়ে থাকেন। তাছাড়া নথিপত্র ও প্রক্রিয়ার জটিলতা শ্রমিকদের জন্য বড় বাধা।
শ্রমিক সংগঠনগুলোর মতে, সচেতনতামূলক কর্মশালা যেমন ইতিবাচক, তেমনি এর পাশাপাশি ভাষাগত সহায়তা, দ্রুত অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা এবং প্রবেশযোগ্য কল্যাণ কেন্দ্র গড়ে তোলা জরুরি।

প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য তথ্য প্রচারে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আরও কার্যকর করা, শ্রমিকদের অংশগ্রহণে নিয়মিত কর্মশালা আয়োজন এবং সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সরকারের যৌথ তদারকি জোরদার করা।
কুয়ালালামপুরের এ কর্মশালাটি প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে নিঃসন্দেহে। তবে বাস্তবায়ন ও সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে মাঠপর্যায়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা না করলে অনেক শ্রমিক এখনও সুরক্ষার বাইরে থেকে যাবেন বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।
এমআরএম/জিকেএস