রেল ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে : নিউইয়র্কে রেলমন্ত্রী

কৌশলী ইমা কৌশলী ইমা , যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৫:২৭ এএম, ২২ জানুয়ারি ২০২০

বর্তমানে বাংলাদেশের ট্রেনের গড় গতিবেগ ৬০ কি.মি। গতিবেগ আরও বাড়াতে হলে রেল লাইনের সংস্কারসহ দ্বৈত রেললাইন বসানো ব্যবস্থা করতে হবে। তা নাহলে ট্রেনে গতি আর বাড়ানো সম্ভব হবে না। রেল ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক প্রবাসী উত্তরবঙ্গবাসীদের দাবির প্রেক্ষিতে রেলমন্ত্রী অ্যাড. নূরুল ইসলাম সুজন তার এলাকার মানুষদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব বলেন।

স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জামাইকায় একটি পার্টি হলে নর্থবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। নিউইয়র্কস্থ নর্থবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডা. আব্দুল লতিফের সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মিল্টনের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা সভায় রেলমন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

jagonews24

মন্ত্রী বলেন, যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর রেললাইন উপযুক্ত করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে পদ্মা রেল লিংক প্রজেক্টে ইলেকট্রিক রেল যাওয়ার সক্ষমতা তৈরি করা হচ্ছে।

‘রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার রেলওয়ের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য ২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর পৃথক রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করে। বর্তমান সরকারের সময়ে নেয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন হচ্ছে। পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্প, ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইস্পিড ট্রেন নির্মাণ প্রকল্পের মতো বড় বড় প্রকল্পের কাজ চলছে। সব কয়টি কাজ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হলে রেলওয়েতে আমূল-পরিবর্তন আসবে।

তিনি বলেন, রেলওয়েতে এখন প্রতিদিন ৮৮টি আন্তঃনগর ট্রেন, ১২৬টি লোকাল ট্রেন, ১৩২টি মেইল এক্সপ্রেস ও ডেমু ট্রেন এবং ৪টি আন্তঃদেশীয় ট্রেনসহ সর্বমোট ৩৫০টি ট্রেন পরিচালিত হচ্ছে। শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর, ২৭০টি কোচ এবং ইঞ্জিন আমদানির মাধ্যমে ইতোমধ্যে ১১৬টি নতুন ট্রেন প্রবর্তন করা হয়েছে। বর্তমানে আরো প্রায় ৭শ’ কোচ এবং ইঞ্জিন আমদানি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ ছাড়া ই-টিকিটিং এবং অনলাইন ব্যবস্থা প্রবর্তন করে যাত্রীদের টিকিট ক্রয় সহজ করা হয়েছে।

নিউইয়র্কস্থ দিনাজপুর জেলা সমিতির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন কবে নাগাদ দেশে ইলেকট্রিক ট্রেন চালু হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৪০টি লোকোমোটিভ (রেল ইঞ্জিন) আমদানি করছি। এ লোকোমোটিভগুলো ডিজেল ও গ্যাস দুই প্রকার জ্বালানিতেই চালানো সম্ভবপর। যদি গ্যাস দিয়ে ইঞ্জিন চালানো যায় তাহলে দিয়ে চালানোর দরকার নেই। ইলেকট্রিকের চেয়ে গ্যাসে চালালে বেশি অর্থ সাশ্রয় হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এ সময় মোশারফ হোসেন বলেন, দেশের দ্বিতীয় স্থল বন্দর হিলিকে আধুনিক ট্রেন স্টেশনে রুপান্তর করার দাবি জানান।

jagonews24

তিনি বলেন, শুধু হিলে স্টেশনের উন্নয়নই নয়, এই শহরটি আধুনিকায়ন করা হলে পার্শবর্তী ভারত দেশের উন্নয়নের ছোঁয়া সহজেই দেখতে পাবে। হিলি স্থল বন্দরকে আধুনিক শহরে রুপান্তরিত করা হলে বর্তমানে বার্ষিক আয় ৫শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা করছেন। এ সময় রেলমন্ত্রীর হাতে তিনি একটি স্মারকলিপি তুলে দেন।

রেলমন্ত্রী অ্যাড. নুরুল ইসলাম সুজন সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র এসেছেন। গত ১৪ জানুয়ারি ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে শিকাগো সিটি সংলগ্ন এলাকায় ‘প্রগ্রেস রেলের কারখানা পরিদর্শন এবং নির্ধারিত সময়ের আগেই উন্নত প্রযুক্তির ৪০টি লোকোমোটিভ (রেল ইঞ্জিন) বাংলাদেশে সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করতে। আগামী বছর ২০২১ সালের মার্চ থেকে পরের বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে এগুলো বাংলাদেশকে সরবরাহের কথা রয়েছে।

শিকাগো থেকে ১৭ জানুয়ারি নিউইয়র্কে ফিরে নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল পরিদর্শনকালে মন্ত্রী কনস্যুলেটে অপেক্ষমান সেবা প্রার্থীদের সাথে কুশল বিনিময়কালে তার সফরের বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন।

সংবর্ধনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নর্থবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ডা. চৌধুরী সারোয়ারুল হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের সাবেক উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, নর্থবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাসানুজ্জামান হাসান, নর্থবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ডা. চৌধুরী মঞ্জুরুল হাসান, পঞ্চগড় জেলা সমিতির সহ-সভাপতি দবিরুল ইসলাম, নর্থবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা জহিরুল ইসলাম টুকু, নর্থবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা প্রকৌশলী এইচ এম শহীদ, নিউইয়র্কস্থ দিনাজপুর জেলা সমিতির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন, দিনাজপুর জেলা সমিতির সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক ডা. নার্গিস রহমান, নর্থবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোহর খান প্রমুখ।

এমআরএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]