পরকীয়ায় তছনছ প্রবাসীর ১০ বছরের সুখের সংসার

জিসান মাহমুদ
জিসান মাহমুদ জিসান মাহমুদ , কুয়েত প্রতিনিধি কুয়েত
প্রকাশিত: ১১:২২ এএম, ০১ অক্টোবর ২০২২
প্রতীকী ছবি

ভালোবেসে বিয়ে। এক বছর পর কোলজুড়ে আসে পুত্র সন্তান। বেশ ভালোই চলছিল তাদের সংসার। একটু সুখের আশায় ২০১৬ সালে কুয়েতে পাড়ি জমান। হঠাৎ এক কালবৈশাখী ঝড় প্রবাসীর ঘর তছনছ করে দিলো। অবশেষে ১০ বছরের সংসারের ইতি টানতে হলো।

কুমিল্লার আকবর হোসেন (ছদ্মনাম) কুয়েত-ইরাক সীমান্তের আব্দালি অঞ্চলে মাজরায় (কৃষিকাজ) কর্মরত। মাত্র ২৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন। কাজে একটু বিঘ্ন ঘটলে কপিলের (মালিক) অমানবিক অত্যাচারের শিকার হন। তবুও তার কোনো দুঃখ ছিল না।

আকবর বলেন, কুয়েত আসার ৬ বছরের মধ্যে আমি দুইবার দেশে যাই। বাড়িতে যাওয়ার পর দেখলাম কারো চাহিদাই আমি মেটাতে পারিনি। যাদের জন্য নিজের আত্মত্যাগ তারা আমার ওপর সন্তুষ্ট নয়।

তিনি বলেন, নিজের মা না থাকায় দুঃখ কষ্টগুলো কারো কাছে শেয়ার করতে পারলাম না। যে স্ত্রী আমাকে এত ভালোবাসতো সেও আর রইলো না। এরপরেও ছেলেটার চেহারার দিকে তাকালে সব ভুলে যেতাম।

‘গত মে মাসে দেশে গেলাম খুব আনন্দ নিয়ে। ভাবলাম স্ত্রী পরিবার নিয়ে দূরে কোথাও ঘুরতে যাব। মরুর বুকে থাকতে থাকতে নিজের কাছে বড়ই একঘেয়েমি লাগে। চাইলেও কোথাও যেতে পারতাম না।’

দেশে যাওয়ার কয়েকদিন পর শুনলাম আমার স্ত্রী আর আমার নেই। ভালোবেসে বিয়ে করা স্ত্রী আরেকজনের সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত। তাও আমি স্ত্রীকে একটি কটূ কথা বলিনি। ভাবলাম সব ঠিক করে নেবো, যোগ করেন আকবর হোসেন।

এক পর্যায়ে তার স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়ে জানাজানি হয়ে যায়। আত্মসম্মানের ভয়ে ১০ বছর বয়সী এক সন্তান রেখে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। এরপর আবার প্রবাসে পাড়ি দেন তিনি।

প্রবাসী আকবর হোসেনের স্ত্রীর চাহিদা ছিল আকাশচুম্বী। যা তার ২৫ হাজার টাকা বেতনে মেটানো সম্ভব ছিল না। এরপরও যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। ছেলেটা যেন কোনোভাবে মায়ের স্নেহ থেকে বঞ্চিত না হয়।

আকবর বলেন, আমার স্ত্রী শুধু আমার ওপর মানসিক নির্যাতন করেনি। আমার ছেলেকেও মারধর করতো। একজন প্রবাসী হিসেবে আমি কিছুই করতে পারতাম না। আমার চেয়ে আমার ছেলেটার জন্য কষ্ট হয়। তাকে দেখার জন্য কেউ রইলো না।

‘আমি মা হারা সন্তান। যেই কষ্ট আমি পেয়েছি সেই কষ্ট এখন আমার ছেলে পাচ্ছে। মাদরাসা পড়ুয়া আমার ছেলেটার দায়িত্ব নেওয়ার জন্য কাউকে খুব প্রয়োজন। কেউ আমার সম্পর্কে জানার পরেও যদি আগ্রহী হয় তবে ইসলামিক রীতি অনুযায়ী তাকে বিবাহ করতে চাই।’

এমআরএম/এমএস

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]