উত্তরাধিকার সম্পর্কিত প্রথম বিধান


প্রকাশিত: ০৬:৫৫ এএম, ০১ নভেম্বর ২০১৬

আরবদের মধ্যে নিয়ম ছিল মৃত ব্যক্তির সমূদয় অর্থ-সম্পত্তি তার স্ত্রী ও সন্তান-সন্তুতি নয়; বরং কেবলমাত্র ছেলেগণ লাভ করত। পিতামাতা ও আত্মীয়-স্বজনগণ বঞ্চিত থাকত। অথচ মৃত ব্যক্তির সম্পদের উত্তরাধিকার শুধুমাত্র ছেলেরা নয় বরং পিতামাতা ও আত্মীয়-স্বজনগণও ন্যায়ানুগভাবে লাভ করার কথা। মৃত ব্যক্তি মৃত্যুর সময় সবার জন্য অসিয়ত করা উচিত। আর মৃত ব্যক্তির অসিয়ত ফরজ ছিল যখন সম্পদ ভাগের আয়াত নাজিল হয়নি। সে সময়ের কথা উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা বলেন-

Quran

আয়াতের অনুবাদ

Quran

আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ১৮০নং আয়াতটি মিরাসের আয়াত নাজিলের পূর্বে সম্পদের উত্তরাধিকার সম্পর্কিত অসিয়ত সম্পর্কে নাজিল করা হয়েছে। যখন মিরাসের আয়াত নাজিল হয় তখন এ আয়াতের ওপর আমল ফরজ থাকেনি।

আল্লাহ তাআলা এ বিধানটি এমন সময় নাজিল করেন, যখন উত্তরাধিকার বণ্টন সম্পর্কিত কোনো আইন ছিলো না। সে সময় প্রত্যেক ব্যক্তিকে অসিয়তের মাধ্যমে তার উত্তরাধিকারীদের অংশ নির্ধারণ করে দিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

এভাবেই মৃত্যুর পরে পরিবারের মধ্যে কোনো বিরোধ এবং কোনো হকদারের অধিকার নষ্ট হবারও ভয় থাকে না। পরে আল্লাহ তাআলা উত্তরাধিকার বণ্টনের জন্য নির্ধারিত আয়াত নাজিল করেন। পরে নাজিলকৃত আয়াতের ব্যাপারে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুটি ব্যাখ্যা প্রদান করেন-

এক. এখন থেকে ওয়ারিসের জন্য কোনো ব্যক্তি আর কোনো অসিয়ত করতে পারবে না। অর্থাৎ যে সব আত্মীয়-স্বজনের জন্য কুরআন অংশ নির্ধারিত করে দিয়েছে। অসিয়তের মাধ্যমে সে সব বিধানের কম-বেশি করা যাবে না। আবার কাউকে মিরাস থেকে বঞ্চিতও করা যাবে না। আর ওয়ারিস আইনগতভাবে যা পায় অসিয়তের সাহায্যে তার চেয়ে বেশি কিছু তাকে দেয়াও যাবে না।

দুই. মৃতব্যক্তির সমস্ত সম্পদের মধ্য থেকে মাত্র তিনভাগে এক ভাগ অসিয়ত করা যেতে পারে। এ দুটি ব্যাখ্যার পর এখন আয়াতের মর্মার্থ দাঁড়ায় এই যে, সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ ওয়ারিসদের জন্য রেখে যেতে হবে। মৃত্যুর পর এগুলো মৃত ব্যক্তির ওয়ারিসদের মধ্যে কুরআন নির্দেশিত বিধান অনুযায়ী বণ্টিত হবে।

পড়ুন- সুরা বাকারা : আয়াত ১৭৯

পরিষেশে...
এ আয়াত মুসলিম উম্মাহর জন্য মহান শিক্ষা। যা মানুষের যথাযথ অধিকারকে সুনিশ্চিত করেছে। অর্থাৎ জাহেলিয়াতের সময় মানুষ যে সকল জুলুমের শিকার হতো তা থেকে কুরআনের এ আয়াত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করেছে। পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা ওয়ারিসদের জন্য সুস্পষ্ট আয়াত নাজিল করেছেন।

মহান দয়ালু দাতা আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ বিধানগুলোকে অন্তর দিয়ে উপলব্দি করার তাওফিক দান করুন। ওয়ারিসদের হক যথাযথ আদায়ে কুরআনের প্রথম আয়াতটি থেকে শিক্ষা নিয়ে মিরাস সম্পর্কিত আল্লাহ তাআলা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।